মোহাম্মদ আবুল বশর
প্রথম কথাঃ= আমাদের স্রষ্টা , প্রতিপালক ও প্রভূ মহান আল্লাহই সমস্ত প্রশংসার মালিক । আমাদের প্রতি তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ সীমাহীন অবারিত । সালাত ও সালাম আমাদের নেতা ও পথ প্রদর্শক আখেরী নবী মুহাম্মদ রাসুলুল্লাহ (সঃ) প্রতি।
আমরা মুসলমান , ইসলাম আমাদের জীবন বিধান ।এ জন্য আমরা মনে মনে যেমন আনন্দ বোধ করি , তেমনি তা আমাদের গৌরবের বিষয় । কিন্তু তা সত্ত্বেও বড় দুঃখের বিষয় এই যে ইসলামের হুকুম আহকাম আমরা তেমন একটা জানিনা এবং জানার চেষ্টা ও করিনা । ইসলামের ব্যাপারে আমাদের আচরন মোটেই গৌরবের বিষয় নয় ।
মুসলমান হওয়ার জন্য প্রথম শত আল্লাহ ও রাসলের প্রতি ঈমান।তার পর নামাজ ,তার পর যাকাত ।আর যাকাত হচ্ছে ইসলামের তৃতীয় রুকন. । নামাজ অস্বীকার করলে যেমন মানুষ আর মুসলমান থাকে না , কাফের হয়ে যায়।.ঠিক তেমনি ভাবে যাকাত অস্বীকার করলে ও মানুষ আর মুসলমান থাকে না কাফের হয়ে যায় । সেই জন্য আই পি সির ওয়েব সাইট http://www.new-muslims.info/bd/ এ যাকাত কি ও কেন এই বিষয় ধারা বাহিক আমাদের লেখা চলবে ইনশাল্লাহ।
** যাকাত কি ?
যাকাত শব্দের অর্থ পবিত্র করা অথবা বৃদ্ধি পাওয়া।অর্থাৎঃ মানুষ তার সম্পদ থেকে আল্লাহর যে প্রাপ্য অংশ দরিদ্রদের জন্য বের করে দেয় , তার নাম যাকাত ।
পরিভাষায় যাকাত বলা হয়, শরীয়তের নির্দেশ ও নির্ধারণ অনুযায়ী নিজের সম্পদের একাংশের স্বত্বাধিকার কোন অভাবী গরীবের প্রতি অর্পণ করা এবং এর যে কোন প্রকার মুনাফা হতে নিজেকে সম্পূর্ণ দূরে রাখা।
যাকাতের নাম করণের কারণ যে : যাকাত আদায়ের দ্বারা যাকাত দাতার মাল বৃদ্ধি পায় অথবা যাকাত দাতার মাল পবিত্র হয় এবং যাকাত দাতার অন্তর কৃপণতার কলুষ থেকে পবিত্রতা অর্জিত হয় এবং কল্যাণমুখী উন্নয়ন সাধিত হয় বলে যাকাত কে যাকাত করে নাম রাখা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেনঃ
خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِم بِهَا
তাদের সম্পদ থেকে তুমি সদাকা গ্রহণ কর , যা দিয়ে তুমি তাদের কে পবিত্র করবে এবং কল্যাণ ও উন্নতি সাধন করবে । ( সুরা তাওবা ১০৩)
কুরআনের আলোকে যাকাত
আল্লাহপাক কুরআনে পাকের যত জায়গায় নামাযের কথা বলেছেন তত জায়গায় যাকাত আদায়ের কথা বলেছেন। ঈমান ও নামাযের ন্যায় যাকাত ও একটি ইসলামের মৌলিক বিধান। এবং মালী ইবাদত।
হাদীসের আলোকে যাকাত
হযরত ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত রাসূল সা. বলেছেন ইসলাম পাঁচটি ইস্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত।
১.কালিমায়ে শাহাদাত (ঈমান) ২.নামায কায়েম করা । ৩.যাকাত আদায় করা ।
৪.হজ করা । ৫.রমজান মাসে রোযা রাখা ( মেশকাত-১২)
উক্ত হাদীসে যাকাত কে তৃতীয় ইস্তম্ভ বলে রাসূল সা. ঘোষণা করেছেন। এর দ্বারা যাকাতের কি গুরুত্ব তা সহজেই উপলব্ধি করা যায়। এভাবে আরো অনেক হাদীস দ্বারা যাকাত ফরয হওয়া ও তা আদায়ের লাভ ও গুরুত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়।
যাকাত আদায় করলে লাভ কি ?
১)আল্লাহ পাকের একটি বড় হুকুম পালন করা হয়, ফলে তার প্রতি আল্লাহপাক সন্তুষ্ট হন।
২) যাকাত দাতার মাল পবিত্র হয় ।
৩) যাকাত দাতার ধন সম্পদ আল্লাহ পাক হেফাজত করেন।
৪) যাকাত আদায়ের দ্বারা অন্তর পাক পবিত্র হয়।
৫) দুনিয়ার লোভ লালসা ও মাল দৌলতের মুহাব্বত কমে গিয়ে আল্লাহর মুহাব্বত অন্তরে প্রবেশ করে।
৬) যাকাত আদায়ের দ্বারা গরীবের সাথে মুহাব্বত সৃষ্টি হয়।
৭) যাকাত দাতার শত্রু কমে যায় এবং তার মাল দৌলতে বরকত দেখা দেয়।
৮) পরকালে বড় পুরস্কার পাওয়া যায়।
চলবে