যাকাত আদায় না করার পরিণাম

যাকাত আদায় না করার পরিণাম

যাকাত আদায় না করার পরিণাম

কোরআনের আলোকেঃ-
যারা যাকাত আদায় করে না তাদের ব্যাপারে আল্লাহপাক বলেন,“যারা সোনা রূপা জমা করে,অথচ আল্লাহর রাস্তায় তা খরচ করে না( যাকাত আদায় করে না) তাদের কে কষ্টদায়ক আযাবের সংবাদ দিন যেই দিন দোযখের আগুনে তাদের কে গরম করা হবে। অতপর দাগ দেওয়া হবে সেগুলো দ্বারা(জমাকৃত সোনা রূপা) তাদের ললাটে,পার্শদেশে ও তাদের পৃষ্টদেশে। ( এবং বলা হবে) স্বাদ গ্রহন কর ঐ জিনিসের যা তোমরা দুনিয়াতে জমা করেছিলে। ” ( সুরা তাওবা)

হাদীসের আলোকেঃ
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসূল সা. বলেছেন,যাকে আল্লাহপাক সম্পদ দান করেছেন আর সে সঠিকভাবে উক্ত সম্পদের যাকাত আদায় করেনি,কিয়ামতের দিন তার সম্পদ কে তার জন্য একটি বিষাক্ত সর্পের রুপ ধারণ করাবেন। সে সর্পকে তার গলায় বেড়ী স্বরূপ করা হবে। সর্পটি নিজ মুখের দুই দিক দ্বারা ঐ ব্যক্তিকে দংশন করতে থাকবে এবং বলবে আমি তোমার মাল,আমি তোমার জমাকৃত সম্পদ। অতপর রাসূল সা. হাদীসের সমর্থনে এই আয়াতটি পাঠ করলেন“ যারা কৃপণতা করে …….( মেশকাত- )
অপর হাদীসে আছে, হযরত বুরাইদা রা. বলেন,যে সমপ্রদায় যাকাত আদায় করে না,আল্লাহ পাক তাদের কে দূর্ভীক্ষের কবলে নিক্ষেপ করেন। অপর এক হাদীসে আছে তাদের উপর রহমতের বৃষ্টি বন্ধ করে দেন। (হাকেম)
যাকাত অস্বীকার করা কেমন ?
যাকাত যেহেতু চার অকাট্য প্রমাণ তথা কোরআন হাদীস,এজমা,কিয়াসের দ্বারা সু স্পষ্টভাবে প্রমাণিত,সুতরাং যাকাত অস্বীকার করা কুফরী। এ জন্যই তো ইসলামের প্রথম খলীফা হযরত আবু বকর রা. তাঁর খেলাফত কালে যারা যাকাত অস্বীকার করেছিল তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন। আর যাকাতের বিধান স্বীকার করে আদায় না করা ফাসেকী ও কবীরা গুনাহ।
যাকাত দিলে সম্পদ কমে না 
অনেকে মনে করে যাকাত আদায় করলে সম্পদ কমে যাবে। অথচ তা সম্পূর্ণ ভূল ধারণা। কারণ দান সদকা,যাকাত ইত্যাদি দ্বারা বাস্তবে কখন ও ধন সম্পদ কমে না। যদি ও বা দেখা যায় যে সাময়িকভাবে তহবীলে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে কিন্তু’ আল্লাহর রহমতে অন্য কোন পন্তায় সে ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। তাছাড়া তা পরকালের একাউন্টে জমা হয় বিধায় চিন্তার কোন কারণ নেই। দুনিয়ার অল্প দিনের হায়াতের জন্য আমরা কত টাকা ব্যাংকে জমা রাখি,পরকালের জন্য কিছু জমা রাখলে অসুবিধাটা কোথায় ? তাছাড়া দেখা যায় যে যারা ঠিক ভাবে যাকাত আদায় করে না তাদের মাল দৌলতে বিপদ মুসিবত,দূর্ঘটনা লেগেই থাকে। তখন অল্প বাচাঁতে গিয়ে বেশি নষ্ট হয়ে যায়। তাই মনে করতে হবে যে যাকাত আদায় করা মানে নিজ অবশিষ্ট সম্পদের হেফাজত করা। হাদীস থেকে বুঝা যায় যে,যাকাত না দিলে সম্পদ নষ্ট হয়ে যায়। তাই সম্পদ কমে যাওয়ার ভয়ে যাকাত দেয়া থেকে বিরত থাকা ঈমানদারী ও চালাকির পরিচয় নয়।

যাকাত ফরজ হওয়ার শর্তসমূহ 
১)- আযাদ হওয়া,কৃতদাসের উপর যাকাত ফরজ না।
২)- আকেল তথা সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন হওয়া সুতরাং পাগলের উপর যাকাত ফরজ না।
৩)- বালেগ হওয়া তথা নাবালেগের উপর যাকাত ফরজ না।
৪)– মুসলমান হওয়া সুতরাং কাফেরের উপর যাকাত ফরজ না।
৫)- নেছাবের মালিক হওয়া
৬)- সেই মালের উপর পূর্ণ এক বছর অতিবাহিত হওয়া। – ( হেদায়া-১৬৫)
৭)- বছরের শুরু এবং শেষ প্রান্তে নেসাব পূর্ণ থাকতে হবে।
৮) – এমন জিনিসের নেসাবের মালিক হতে হবে যা এক বছর পর্যন্ত বাকি থাকে।
৯) – ঐ মাল হাজতে আসলিয়া তথা মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত হতে হবে।
১০)- মাল নিজের আয়ত্বাধীন থাকতে হবে।
১১)- উক্ত মালের মধ্যে অন্য কোন হকের সংমিশ্রণ না থাকতে হবে।
১২) -উক্ত মালের মধ্যে তিনটি গুণের একটি গুন পাওয়া যেতে হবে। ক.মূল্যমাণ খ.বর্ধিষ্ণু গ.ব্যবসার নিয়ত
( ইলমুল ফিকাহের বরাতে মাসায়িলে রিফআত কাসেমী)
চলবে

Related Post