ইসলামই একমাত্র খাঁটি ধর্ম

পূর্বে প্রকাশিতের পর

ইসলামই একমাত্র  খাঁটি ধর্ম

ইসলামই একমাত্র খাঁটি ধর্ম

৮নং যুক্তি : ধর্মের দৃষ্টিতে সাধু ব্যক্তি :

ইসলামের দৃষ্টিতে যারা সাধু বা পূণ্যবান ব্যক্তি তাঁরা হচ্ছেন হক্কানী আলেম,পীল বুজুর্গ, সুফি-দরবেশ ইত্যাদি যাঁরা কেউই অশিক্ষিত নন। যাঁদেরই চরিত্রে কোনো খুঁত নেই তাঁরাই হচ্ছেন ইসলামের দৃষ্টিতে সাধু এবং তারা সংসর ত্যাগী নন।

হিন্দু ধর্ম মতে সাধু তাদেরকে দেখা যায় অশিক্ষিত,গেরুয়া,বসন পরিহিত,চিমটাধারী, সংসারত্যাগী, শশ্মানে বসবাসকারী। যাদের সঙ্গে কিছু বিধবা নারী কদুর বস হাতে নিয়ে ঘোরা ফেরা করেন ও শ্মশানে একত্রে বসবাস করেন। আর কোলকাতার কালিঘাট মন্দিরের সামনে দেখা যায় কিছুলোক মাথায় মেয়েদের ন্যায় লম্বা চুল রাখেন আর সমস্ত শরীর ছাই মেখে উলঙ্গ অবস্থায় পড়ে থাকেন। তাদেরকে বলা হয় নেংটা সাধু। আর বিদেশীদের নিকট ‘পায়াস’ ও ‘অনেষ্টম্যান’ বলে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় তাদেরকেই।

ওদিকে খ্রীষ্টানদের যারা ধর্মীয় নেতা অথবা সাধু তারা কিন্তু একজনও বিবাহিত নন। কাজেই তারা একজনও সাধুর ব্যাটা সাধু নন। অর্থাৎ যারা ফাদার, বিশপ বা পোপ তাঁরা কেউই ফাদার বিশপ বা পোঁপের পুত্র নন, কারণ তাঁদের পিতা পোপ, বিশপ বা ফাদার হলে তো বিবাহই করতেন না। কাজেই প্রথমেই এ কথা স্বীকার করে নিতে হবে যে, আর যাই হোক তারা কোনো ধার্মিক লোকের সন্তান নন। তাছাড়া এইসব ধার্মিক যারা বিবাহিত নন এবং যারা সিষ্টারদের সঙ্গে বাস করেন আর যাদের মধ্যে মানবীয় যৌন প্রবৃত্তি রয়েছে তারা- কি একথা বলতে পারেন যে তারা রমণী স্পর্শ করেন না? তারা যদি বলেন তবু কি মানুষ এ যুক্তি বিরোধী কথা মেনে নিতে পারবে? আর যা পারেনি আল্লাহর কোনো নবী তা কি তারা পারতে পারেন? তবে দৃষ্টি ভঙ্গি যদি তাদের এরূপ হয় যে; ধর্মগুরুর বিবাহটাই দোষের কাজ কিন্তু যৌন আচরণটা কোনো দোষের কাজ নয়, তবে সেটা ভিন্ন কথা। হ্যাঁ তবে এ কথা সত্য যে, দুনিয়ার প্রতিটি সৃষ্টিই আল্লাহর বিধানের অধীন।

কাজেই আল্লাহর বিধানকে উপেক্ষা করে চলা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। যেমন বাঁচতে হলে পানাহার, প্রস্রাব- পায়খানা, ঘুম ইত্যাদি বাদদিয়ে বাঁচা যায় না,ঠিক তেমনই স্বামী-স্ত্রী হিসেবে জীবন যাপন করাটাও যেহেতু আল্লাহর বিধান কাজেই আল্লাহর এ বিধানকে বাদ দিয়েও চলা যায় না। আল্লাহর ও বিধানটাকে অর্থাৎ যৌন প্রবৃত্তিকে যারা দমন করে রাখার দাবী করেন তারা হয় তাদের অবৈধ যৌন আচরণের কথা গোপন করেন অথবা অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করেন,যা সহ্য করা সাধ্যের বাইরে।

একটি প্রশ্নঃ একটি চিন্তার বিষয়

ধরুন পৃথিবীর তিনটি ভূ-খন্ডে বাংলাদেশের তিনটি ধর্মের সাধু ব্যক্তিদের জন্য বেছে নেয়া হলো-একটি হিন্দুদের আরেকটি খ্রীষ্টানদের এবং অপরটি মুসলমানদের সাধু ব্যক্তিদের জন্য এরপরে এক একটা ভু-খন্ড এক এক জাতের সাধু ব্যক্তিদের রেখে আসুন, এর কিছুদিন পর ঐ ভূখন্ডগুলি ভিজিট করে আসুন দেখুন কোনটার কি অবস্থা হলো।

হিন্দু সাধুদের ভূ-খন্ডে গেলে সব কিছু দেখে শুনে মনে হবে যেন ৫/৬ হাজার বছর পূর্বের দুনিয়ায় এসে পড়েছি। অর্থাৎ ৫/৬ হাজার বছর পূর্বে বনে জঙ্গলে বসে যে সব মুনিঋষি তপজপ করতেন সেইখানে এসে পড়েছি। সেখানে দেখা যাবে কদুর বস হাতে বৈরাগীদের, আর দেখা যাবে সন্যাসীদের। তাদের বেশীর ভাগ দেখা যাবে শ্মশান ঘাটে। আর কোলকাতার কালিঘাট মন্দিরের সামনে গায়ে ছাই মাখানো যেসব উলঙ্গ সাধু আছে তাঁদেরকেও সেখানে দেখতে পাওয়া যাবে। যা দেখে মনে হবে যেন সভ্যতার কোনো ছোঁয়া তাঁরা পায়নি।

২নং ভু-খন্ড যেখানে খ্রীষ্টান সাধু ব্যক্তিদের বাস করেন সেখানে ৫০ বছর পর একটি লোকও পাবেন না, কারণ তাঁদের যারা সাধু তারা কেউই বিবাহিত নন। কাজেই সে ভু-খন্ড জনশূন্য হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। আর পৃথিবীর সব খ্রীষ্টান যদি সাধু হয়ে যায় তবে ৫০ বছর পর এ পৃথিবীতে আর একটি খ্রীষ্টানও পাওয়া যাবে না। এ কারণেই তাদের ধর্মে সবার ধার্মিক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর একটি কথাই কিন্তু একটি মহাসত্য কথা, তা হচ্ছে খ্রীষ্টানদের কোনো সাধুই সাধুর ব্যাটা নয়, কারণ তাঁর পিতা সাধু হলে তো বিয়েই করতেন না। তাঁদের যত সাধু সবাই কিন্তু সাধারণ লোকের ছেলে। আমি বলি না তারা কোনো খারাপ লোকের ছেলে। তবে তারা যে,কোনো সাধু ব্যক্তির সন্তান নন,এটা তাদের ধর্মেরই বিধান। এটা তাদের নামে কোনো গালাগালিও নয় বা কোনো প্রকার কুৎসাও নয়। যা বাস্তব শুধু তাই বলছি। হ্যাঁ তবে একটি কথা বলা দরকার তা হচ্ছে এই যে, যদিও সব নবীই বিবাহ করেছেন-একমাত্র ঈসা (আঃ) ছাড়া। আর ঈসা (আঃ) এর অনুগত অনুসারী হওয়ার জন্য খ্রীষ্টান সাধুগণ বিবাহ করেন না। কিন্তু এর ভিতরে এমন একটি মহাসত্য লুক্কায়িত আছে যা হয়তো খ্রীষ্টান ‘সাধুগণ চিন্তা করেন না। তা হচ্ছে এই যে,হযরত ঈসা (আঃ) ছিলেন বিন পিতায় সন্তান তাই হয়তো পুরষ সুলভ কোনো পৌরুষত্ব জন্মসূত্রে তিনি লাভ করেননি। যার ফলে তিনি বিবাহের অযোগ্য ছিলেন। কিন্তু তাই বলে তিনি নবী হিসেবে বিবাহ নিষেধ করেননি। কথাটি শুধু তর্কের খাতিরেই বলা হলো।

৩য় ভু-খন্ডে যেখানে মুসলমান সাধুদের রেখে আসা হয়েছিল সেখানে গেলে দেখা যাবে একটা বেহেশতি রাষ্ট্র  কায়েম হয়ে গেছে। মুসলমানদের সাধু ব্যক্তি যেহেতু প্রতিটি বিভাগেই আছে তাই মুসলমান সধুদের বেছে নিয়ে যেখানে যেমন পুরুষ যাবে যেখানে মেয়েও যাবে। সেখানে যেমন আলেম মৌলভী যাবেন তেমন সেখানে কুলি মজুরও যাবে। সেখানে প্রত্যেক বিভাগের কর্মচারী থাকবেন। পুলিশ মিলিটারীও থাকবেন, সব ধরনের কারিগরও থাকবেন  এবং ব্যবসায়ীও থাকবেন। কারণ মুসলমানদের সুফি মুত্তাকীণ পরহেজগার লোক সব ক্ষেত্রেই আছে। আর এই ধরনের সৎ লোকগুলিই যদি কোনো ভূ-খন্ডে একত্রিত হতে পারেন তবে সেখানে যে বেহেশতি রাষ্ট্র কায়েম হবে তা না বললেও বুঝতে কারও কষ্ট হওয়ার কথা নয়।

এবার চিন্তা করুন যে ধর্মের সাধু ব্যক্তিদের দ্বারা একটা দেশ চলতে পারে না; সে ধর্ম কি করে আল্লাহর মনোনীত ধর্ম হতে পারে? এই যুক্তিতে খ্রীষ্টান ধর্ম যে যুক্তিগ্রাহ্য নয় তা প্রমাণ হলো। অতঃপর হিন্দু সাধুদের বেলায় দেখুন তাদের সাধুদের ভু-খন্ডকে কেউ কি সভ্য লোকের ভু-খন্ড হিসেবে স্বীকার করবে? হ্যাঁ তবে যারা যুক্তি মানতে নারাজ তাদের কথা ভিন্ন। আমার আপনার দায়িত্ব হলো লোকদের বুঝানো। আপনি আমাকে বুঝাবেন কিন্তু আমি যদি না বুঝার শপথ করি তবে কেউই আমাকে বুঝাতে পারবে না। যেমন আমি যদি জিদ ধরি যে, আমার পিতার বিশ্বাস কোনো প্রকারেই ত্যাগ করবো না,তবে আপনার কি করার আছে বলুন। এমন লোকও আমাদের সমাজে কিছু আছে। তাদের ব্যাপারে আমার কিছু বলারও নেই এবং কিছু করারও নেই। (চলবে)

Related Post