তাওহীদ বিষয়ক প্রশ্নোত্তর (৩)

তওহীদ শিক্ষা

তওহীদ শিক্ষা

পূর্বে প্রকাশিতের পর

তিনটি মৌলনীতির পরিচয়

আল্লাহ্‌কে প্রতিপালক, ইসলামকে ধর্ম এবং মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে নবী ও রাসূল হিসেবে গ্রহণ করে আমি সন্তুষ্ট।

তিনটি মৌলনীতি জানা আমাদের জন্য ওয়াজিব: তা হলো, সৃষ্টি কর্তা, ধর্ম এবং রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা।

প্রথম মূলনীতি: আল্লাহ্‌ সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা:

১- আমার প্রতিপালক আল্লাহ্‌, তিনি সৃষ্টি কর্তা, সারা বিশ্বের মালিক এবং পরিচালনাকারী। আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন:

 اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ وَكِيلٌ    الزمر :62

অর্থ: আল্লাহ্‌ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা ও সব কিছুর কর্মবিধায়ক। সূরাহ্‌ আয্‌যুমার আয়াত ৬২।

২- আমার পালনকর্তার নিদর্শন এবং সৃষ্টি জীবের মাধ্যমে  আমি তাকে জানব। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:

وَمِنْ آيَاتِهِ اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ

অর্থ: তাঁর নিদর্শনের অন্যতম হল: দিন, রাত, চন্দ্র এবং সূর্য। সূরা আল-ফুস্‌সিলাত আয়াত ৩৭।

৩- আল্লাহ্‌ তায়ালা এক-অদ্বিতীয় এবং শরীকহীন সত্য মা’বূদ। তিনি ব্যতীত অন্য কেহ ইবাদাতের হক্বদার বা যোগ্য নয়। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:

  يَا أَيُّهَا النَّاسُ اعْبُدُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ وَالَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ البقرة : 21

অর্থ: হে মানব সকল তোমরা তোমাদের সেই পালনকর্তার ইবাদাত করো যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পারো। বাক্বারাহ্‌ আয়াত-২১।

প্রশ্ন ১: আল্লাহ্‌ আপনাকে কেন সৃষ্টি করেছেন?

উঃ তিনি আমাকে তাঁর ইবাদাত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন, আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন:

﴿وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ﴾[الذاريات : 56]

অর্থ: আমি জ্বিন এবং মানুষকে কেবল মাত্র আমার ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করেছি। সূরাহ্‌ আয্‌ যারিয়াত আয়াত ৫৬।

প্রশ্ন ২: আল্লাহর ইবাদাত কি?

উঃ তাঁর ইবাদাত হল: একত্ববাদের সহিত আল্লাহর আনুগত্য করা।

প্রশ্ন ৩: লাইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌ এর অর্থ কি?

উঃ আল্লাহ্‌ ব্যতীত সত্য কোন মা’বূদ বা উপাস্য নাই।

দ্বিতীয় মূলনীতি: ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন  করা:

১- ইসলাম হলো আল্লাহর একত্ববাদ, তাঁর আনুগত্য করতঃ তাঁর অবাধ্য কাজ পরিত্যাগ করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন

وَمَنْ أَحْسَنُ دِينًا مِمَّنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ    النساء : 125

অর্থ: যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকটে আত্মসমর্পণ করতঃ ভালো কাজ করে; তার চাইতে ধর্মের দিক দিয়ে আর কে উত্তম হতে পারে? সূরাহ্‌ আন্‌ নিসা আয়াত -১২৫।

২- ইসলাম সেই ধর্ম যা আল্লাহ্‌ তায়ালা খুশি হয়ে সকল মানুষের জন্য চয়ন করেছেন। তিনি বলেন:

وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينا *  المائدة : 3

অর্থ: এবং সন্তুষ্ট চিত্তে ইসলামকে আমি তোমাদের দ্বীন (ধর্ম) মনোনীত করলাম। সূরাহ্‌ আল্‌ মায়িদাহ্‌ আয়াত ৩।

: ৩- ইসলাম কল্যাণ সৌভাগ্য এবং সন্তুষ্টির ধর্ম। আল্লাহ্‌ তায়ালা  বলেন

بَلَى مَنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ فَلَهُ أَجْرُهُ عِنْدَ رَبِّهِ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُم يَحْزَنُونَ   البقرة : 112

অর্থ: অবশ্য যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্যে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করেছে এবং সৎকর্মশীল হয়েছে, ফলতঃ তার জন্য স্বীয় প্রতিপালকের নিকট প্রতিদান রয়েছে এবং তাদের জন্যে কোন ভয় ও চিন্তা নেই। সূরাহ্‌ বাক্বারাহ্‌ আয়াত ১১২।

প্রশ্ন ১: ইসলামের রুকন্‌ (স্তম্ভ) কয়টি ও কি কি?

উঃ ইসলামের রুকন্‌ (স্তম্ভ) পাঁচটি:

ক) এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ্‌ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নাই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল।

খ) সালাত প্রতিষ্ঠা করা।

গ) যাকাত প্রদান করা।

ঘ) রমযান মাসের সিয়াম (রোযা) পালন করা।

ঙ) সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বাইতুল্লাহ্‌ শরীফের হজ্জ করা।

তৃতীয় মূলনীতি হল: নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জানা ও চেনা:

১- আমার নবী মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ্‌ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।

২- বিশ্বের সকল মানুষদেরকে ইসলাম শিক্ষা দেওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রেরণ করেন।

৩- নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য করা আমাদের জন্য ওয়াজিব (অপরিহার্য)। আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন:

﴿ وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا ﴾ [الحشر : 7[

অর্থ: এবং রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে যা দেন তা তোমরা আঁকড়ে ধরো এবং যা থেকে তিনি তোমাদেরকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো। সূরাহ্‌ আল হাশর আয়াত ৭।

Related Post