মহা সত্যের ডাক

মহা সত্যের ডাক

মহা সত্যের ডাক

[বিশেষভাবে দুনিয়ার অমুসলিম শিক্ষিত জ্ঞানী ব্যক্তিবর্গ এবং সাধারণভাবে দুনিয়ার সকল মানব সন্তানের বিবেকের প্রতি আমার আকুল আবেদন]

আদি পিতা মাতার সন্তান হিসেবে আপনারা প্রত্যেকেই আমার ভাই ও বোন। তাই আমি আপনার ভাই হিসেবেই অত্যান্ত দরদ ভরা মন নিয়ে আপনার বিবেকের নিকট কিছু কথা তুরে ধরতে চেয়েছি। সে কথাগুলি অতি সংক্ষিপ্তাকারে লেখা হয়েছে এই ছোট্ট বইখানার মধ্যে। তাই মেহেরবাণী করে কিছুটা সময় ব্যয় করে এ বইটা একটু মনযোগ সহকারে নিরপেক্ষ মন নিয়ে পড়ে দেখতে অনুরোধ জানাই।

বইটা লিখেছি আমার একটা বিশ্বাস ও বিশ্বাস মোতাবিক বিবেকের তাড়নায়।

আমার জ্ঞান-বুদ্ধি অত্যন্ত কম। কিন্তু এ বিশ্বাসের মধ্যে কোন ঘাটতি নেই যে পরকাল হবেই এবং সেদিন আল্লাহর বিচারের যে অপরাধী হবে তাকে আগুনের শাস্তি পেতে হবে। যে আগুণকে আমরা এক সেকেন্ডের জন্যেও সহ্য করতে পারি না তা ভোগ করতে হবে অপরাধীদের অনন্ত কাল ধরে। আর যারা আল্লাহর বিচারে নির্দোষী হবে তাদের জন্যে রয়েছে অফুরন্ত পুরষ্কার।

আমার এ বিশ্বাস মোতাবিক আমার জ্ঞান চক্ষু দ্বার যখন দেখতে পাচ্ছি কিছু লোক যারা আমারই ভাই, বোন তারা চিন্তা ভাবনা ছাড়াই ছুটে চলেছে আগুনের দিকে তখন আমি তাদের এ পথে চলতে নিষেধ না করে পারি কি করে? পারি না বলেই বুদ্ধির যুগে আপনাকে বিনা যুক্তিকে চেখ বন্ধ করে কোন কিছু মেনে নিতে বলিনি। আপনার বিবেকের সামনে কিছু যুক্তি রেখেছি। আপনি তা একটু পড়ে দেখুন। অতঃপর আপনার মূল্যবান বিবেক যা বলবে আপনি সেটাই গ্রহণ করবেন।

আমি লিখেছি আমার বিবেকের তাড়নায়, আপনিও চলবেন আপনার বিবেকের সিদ্ধান্তে। এখানে কারও প্রতি কোন প্রকার জোর জুলুম বা অন্য কিছুর কোন বালাই নেই।

আমি মনে করি আমার সীমিত জ্ঞান বুদ্ধি ও সামর্থ মুতাবিক আমার দায়িত্ব আমি পালন করার চেষ্টা করেছি। এরপর আপনার কি দায়িত্ব তা আপনার বিবেকই সিদ্ধান্ত নেবে সেখানে আমার কিছুই বলার নেই।

ঈমানদার ভাই-বোনদের প্রতি আমার আবেদন

আমরা অনেক সময় অনেক সত্য কথা বলতে পারি না সাম্প্রদায়িকতার ভয়ে। মনে করি আমার কথা যতই মহাসত্য হোক না কেন; তা বললে আবার কেউ কিছু মনে না করে। আমি কিন্তু এই ধারণার সঙ্গে একমত নই। কারণ, আমরা সেই মনেরই মানুষ যে মানুষ হঠাৎ কোন অমুসলিমের ঘরে আগুন লেগেছে দেখলে তাড়াতাড়ি বালতিতে পানি নিয়ে দৌঁড়াই তা নিভাতে তখন তো সাম্প্রদায়িকতার ভয় করি না। আমরা যখন কাউকে দুর্ঘটনায় আহত হতে দেখি তখন তো দৌঁড়ে চলে যাই তাকে একটু সাহায্য করতে। তখনও তো আগে শুনে দেখি না যে সে কোন জাতের লোক এবং তাকে সাহায্য করলে আবার সাম্প্রদায়িকতার দায়ে কেউ আমাকে দায়ী করবে কিনা। তা তো ভাবি না।

আমি মনে করে ঠিক তদ্রুপই আমাদের জ্ঞান চক্ষু দ্বারা যখন দেখেছি যে এক দল লোক আগুনের দিকে ছুটে যাচ্ছে তখন তাকে আমি ভাই হিসেবে দরদের সাথে বুঝাব যে ভাই এ পথ বড় কঠিন বিপদের পথ। এ বুঝানোতে আমার ভয়টা কিসের? আর দোষটাই বা কি? বরং আমি মনে করি আমরা যদি তাদেরকে ফেলাবার চেষ্টা না করি তা’হলে আল্লাহর কাছে দায়ী হয়ে যাব। তাই আমার অনুরোধ আপনাকে আল্লাহ যতটুকু সামর্থ দিয়েছেন তাই দিয়েই অমুসলিম ভাইদের প্রতি দাওয়াত পৌঁছান। এরপর তারা তা কিভাবে গ্রহণ করবে সেটা আমাদের নয়; তাদের ব্যাপার। আসুন আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করি। আমরা দাওয়াত পৌছে দেই। তাদের চিন্তা তারা করবে।

হ্যাঁ, তবে আমি একথা মনে করি না যে অমুসলিম ভাই-বোনদের বুঝানোর মত যত যুক্তি-বুদ্ধি তা সবই আমার কাছে জমা আছে। আমি মনে করি আপনার কাছে হয়তো এর চাইতেও বহু জোরালো যুক্তি রয়েছে যা আমার মাথায় ধরে না। আপনি সেগুলোকেও এর সঙ্গে যোগ করে নিন। আপনিও লিখুন, মুখে বুঝান। এভাবে আসুন আমরা যারা একই বিশ্বাসের লোক তারা একই সঙ্গে আমাদের অমুসলিম ভাই-বোনদের মহাসত্যের দিকে আহবান জানাই এবং এ আহবান সারা দুনিয়ায় অমুসলিম ভাই-বোনদের নিকট পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করি।

আমার চিন্তাধারা

আমি চিন্তা করি, কারও সামনে কেউ যদি এন্ড্রিনকে ঔষধ মরে করে বাঁচার লোভে পান করতে যায় তবে তাকে সেই এন্ড্রিন পান করা থেকে বিরত রাখা যেমন এন্ড্রিনকে বিষ বলে জানা লোকদের জন্য একটা বিরাট নৈতিক দায়িত্ব হয়ে পড়ে ঠিক তেমনই বরং তার চাইতেও অনেক গুণ বেশী দায়িত্ব এসে পড়ে তাদের উপর যারা স্পষ্টভাবে বোঝেন যে, কিছু লোক ধর্মীয় অজ্ঞতার কারণে পরকালের মুক্তির আশায় ভুল করে জ্বলন্ত আগুনের দিকে ছুটে যাচ্ছে, তাদেরকে ঐ আগুনের পথ থেকে ফেরানো আল্লাহ বিশ্বাসীদের জন্য এটা এক পরম দায়িত্ব। এটা যে কত বড় দায়িত্ব তা মানুষ স্পষ্টভাবে বুঝতে পারতো যদি মৃত্যুর পরের ঘটনাগুলিকে আল্লাহ চর্মচক্ষে দেখার কোন ব্যবস্থা করে দিতেন। কিন্তু যদিও আল্লাহ তা দেখার কোন ব্যবস্থা করেননি তবুও জ্ঞান চক্ষু দ্বার তা দেখার ব্যবস্থা আল্লাহ করেছেন। জ্ঞানের চোখ দিয়ে তা কিছু লোক দেখেও থাকেন।

আমি চিন্তা করি, একটা লোককে আগুনে পুড়তে দেখেও যারা তাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করে না তারা যেমন চরম নিষ্ঠুর, নির্দয় ও পাষন্ড ঠিক তেমনই চরম নিষ্ঠুর নির্দ হিসেবে আমি নিজেই আল্লাহর দরবারে চিহ্নিত হবো যদি আমি আমার জ্ঞান চক্ষুতে স্পষ্টভাবে কিছু লোককে আগুনের দিকে ছুটে যেতে দেখেও তাদেরকে সেই আগুনের পথ থেকে ফেরানোর জন্যে আমার সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা না করি। এই অনুভূতিই আমাকে বহুদিন থেকে পীড়া দিচ্ছিল; তাই আমার দায়িত্ব পালনের জন্য আমার ইে ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাটুকু তামাম বনি-আদমের সম্মুখে ‘মহাসত্যের ডাক’ নামে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

ধারাবাহিকবাবে বইটি আমরা এই ওয়েব সাইটে প্রকাশ করবো, ইনশা আল্লাহ। আশা করি সম্মানিত ভিজিটরগণ বইটি পড়বেন।

আমি আশা করি, মেহেরবান আল্লাহ দয়া করে আমার এই ক্ষুদ্র চেষ্টাকে কবুল করে নেবেন এবং এটাকে আমার ও হাজার হাজার বনি আদমের নাজাতের একটি উছিলা করে দেবেন। আল্লাহ! আমার এ নেক আশাকে কবুল করুন আমীন! ছুম্মা আমীন।

-খন্দকার আবুল খায়ের

Related Post