তৃতীয় পর্ব
দেশ ও জাতির মহাকল্যাণে রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান এবং জাতীয় পর্যায়ের নীতি নির্ধারণী মহলের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের নিকট কিছু ইসলামী প্রস্তাব প্রেরণ:
এক সময় দেশ সম্পর্কে কিছু তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা নিয়ে পর পর ক’এক রাতেই ভয়ঙ্কর দু’টো সপ্ন দেখতে থাকি। আমি সপ্নগুলো সম্পর্কে অত্যন্ত ভীত সন্ত্রস্ত থাকতাম। কারণ রাতের যে অংশে স্বপ্ন দেখলে তা বাস্তবায়িত হয়, সে সময়ই সপ্নগুলো দেখতাম। এটা ২০০৫ সালের জুন / জুলাই’র কথা। দেখতাম যে, কিছু ব্যক্তি গোপনে লোক চলাচলের জায়গার চিপা-চাপায় বিষ্ফরক জাতিয় কিছু রেখে পালিয়ে যাচ্ছে, এর কিছূ সময় পর সেই বিষ্ফরকগুলো বিষ্ফরিত হয়ে মানুষজন আহত নিহত হচ্ছে। আর একটি স্বপ্ন ছিলো এমন, কিছু মুখোশধারী অপরিচিত লোক বিভিন্ন অস্ত্র ও গোলাবারূদে সজ্জিত হয়ে চারপার্শে¦ ঘেরা গাছ-পালা দ্বারা আবৃত আমাদের কোন একটি ফরমেশন সদর দপ্তর আক্রমন করে গোলা-গুলি করছে। আমিও একটি এমজি পোষ্ট থেকে আক্রমনকারীদের উপর ব্রাস ফায়ার করে তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করছি। আমি তৎকালীন জাতীয় মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা উবায়দুল হক এবং মাসিক মদিনার সম্মানিত সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দিন সাহেবের নিকট ব্যক্তিগত চিঠির মাধ্যমে সেই সপ্নের তাবিরগুলো জানতে চাই। কিন্তু স্বপ্নের তাবিরগুলো জানতে পারিনি। তবে আমার অন্তঃকরণে নিশ্চিত ধারণা ছিলো, যে দুঃস্বপ্ন দু’টি দেখছি তাতে দেশে মারাত্মক যে কোন দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে। এ বিপদ থেকে সকলকে উদ্ধার হতে হবে, কিন্তু কিভাবে? সেগুলো নিয়েই ভাবছিলাম। এমতাবস্থায় আল্লাহর পক্ষথেকে ধারাবাহিকভাবে আরো কিছু ইসলামী শিক্ষার নিত্যনতূন পরিকল্পনা অন্তঃকরণে সৃষ্টি হতে লাগলো। তারপর সিদ্ধান্ত নিলাম দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে কুর’আনের কথাগুলি যুক্তির মাধ্যমে উপস্থাপন করবো। যাতে তিনি সে অনুযায়ী সারা দেশের মানব মন্ডলীর কাছে ইসলামী শিক্ষামূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে সকলের কাছে পবিত্র কুর’আনের আলো পৌছে দিতে পারেন, আর তার ফলে আল্লাহর রহমতে আমরা যে কোন মহাবিপদ কেটে উঠতে সক্ষম হবো ইনশা-আল্লাহ। কারণ তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে সিদ্ধান্ত দিবেন, দেশের জনগণ তা মেনে চলবে। সেই মোতাবেক তৎকালীন মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, ইসলামীক ফাউন্ডেশনের সম্মানিত মহাপরিচালক মহোদয়, জাতিয় মসজিদের তৎকালীন সম্মানিত খতিব ও ইমাম মাওলানা উবায়দুল হক সাহেবের নিকট আবেদন পত্রের মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণার্থে আমার কিছু কল্যাণজনক ইসলামী প্রস্তাব উপস্থাপন করলাম। এ ছাড়াও আমাদের দেশের অত্যন্ত একটি জনপ্রিয় ইসলামী পত্রিকা মাসিক মদিনায় প্রস্তাবগুলো প্রচার করার জন্যে সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দিন সাহেবের নিকট অনুরোধ পাঠাই। এরই মধ্যে চার দলিয় জোট সরকারের শেষ দিকে আমার একটি স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলো। আমার মনে আশঙ্কা হলো যে, একটি স্বপ্ন যখন বাস্তবায়িত হয়েছে, তখন দ্বিতীয়টিও হয়তো বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু সেই ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্ন যাতে বাস্তবায়িত না হয়, তার ব্যবস্থা করতে হবে। কিছুদিন পর দেশের পট পরিবর্তন হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হল। আমি দু’টো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে মাননীয় ধর্ম উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, দুর্নীতি দমন কমিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান, মাননীয় প্রধান বিচারপতি, গুরুতর অপরাধ দমন জাতীয় কমিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন সম্মানিত আইনজীবি, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মানিত সভাপতি জনাব শওকত মাহমুদ, চ্যানেল আই এর তৃতীয় মাত্রা অনুষ্ঠানের সম্মানিত উপস্থাপক জনাব জিল্লুর রহমান সহ জাতীয় পর্যায়ের আরো অনেকের কাছেই দেশ ও জনকল্যানার্থে কিছু ইসলামী প্রস্তাব বাস্তবায়নের নিমিত্তে তাদের কাছে উপস্থাপন করি, যাতে করে তাঁরা আমার প্রস্তাবগুলো জনকল্যাণে সরকারের নিকট বাস্তবায়নের সুপারিশ করেন। এতে দেশের মানুষ ইসলামী জ্ঞান আহরণ করে সচতন হবে এবং আল্লাহর ইচ্ছায় দেশ ও জাতির দুশমনদের যে কোন আক্রমন থেকে বাঁচতে পারবে। ড.ফকরুদ্দীন আহমদ সাহেবের সরকারের আমলে ধর্ম মন্ত্রনালয় কর্তৃক আমার প্রস্তাবগুলো গৃহিত হয় এবং তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দান করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রনালয়, প্রশাসনিক শাখা হতে সহকারী সচিব মোঃ তরিকুল ইসলাম কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি পত্র, ইসলামীক ফাউন্ডেশনের মাননীয় মহাপরিচালকের দপ্তরে পাঠানো হয়।
সেই পত্রের একটি অবগতি অনুলিপি ডাক যোগে আমার কুয়েতের ঠিকানায়ও পাঠানো হয়, যার পত্র নং – ধবিম/প্রঃ/৬-৪/২০০৪/৪৩৭ তারিখঃ ২৫-০৫-২০০৭ খ্রিঃ। আমার এগারোটি প্রস্তাবের মধ্যে একটি ছিলো বাংলাদেশের সমসাময়িক বিষয় ও ঘটনা প্রবাহের উপর খুতবা প্রস্তুত করতঃ একই খুতবা দেশের সকল মসজিদে বাংলাভাষায় প্রচার করার ব্যবস্থা করা। যেমনটি কুয়েতে করা হয়। এ জন্য কুয়েতের বিভিন্ন মসজিদ থেকে বাংলা, উর্দু, ইংরেজী ও আরবী ভাষায় প্রদানকৃত খুতবা অডিও ক্যাসেটের মাধ্যমে ধারণ করে সেই ক্যাসেট গুলো নমুনা হিসেবে প্রস্তাবের সাথে পাঠিয়েছিলাম। আমার খুতবার প্রস্তাবটি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় নিজেই ২০০৭ সালের জাতীয় ইমাম সম্মেলণে বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছিলেন। যা তার পরবর্তী দিনের সমস্ত জাতীয় পত্র-পত্রিকায় প্রচারিত হয়েছিল। আর স্থানীয় ভাষায় জুমুয়ার খুতবা প্রচার করা যাবে কী না? এ ব্যাপারে আমার বন্ধু মাওলানা রুহুল আমিন ভাই এর মাধ্যমে নয়া দিগন্ত পত্রিকায় একটি প্রবন্ধ লিখার অনুরোধ জানালে তিনি তা লিখেন। এবং প্রন্ধটি ২৩ নভেম্বর’২০০৭ তারিখে নয়া দিগন্ত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়, যেখানে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের ঘোষণাটির স্বপক্ষে কুর’আন সুন্নাহর আলোকে বিভিন্ন দলিল প্রমাণও উপস্থাপন করা হয়। প্রবন্ধটি পত্রিকায় প্রচারিত হওয়ার পরবর্তী জুমাবার থেকে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মসজিদে বাংলাভাষায় খুতবা প্রচার বাস্তবায়ন করা হয়। এ ছাড়া বাদ বাকি দশটি প্রস্তাব আর বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। তারপর বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দুই মাসের মধ্যেই আমার দেখা দ্বিতীয় ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নটি বাস্তবায়িত হয়েছে।
কুয়েতের বাংলা সাহিত্যাংগনের মাধ্যমে দাওয়াতী তৎপরতা:
একদিন এক জায়গায় দেখতে পেলাম কুয়েত হতে কিছু বাংলা পত্র-পত্রিকা বের হচ্ছে, এবং আমার এক সহকর্মী সার্জেন্ট আলীউজ্জমান ভাই সেগুলিতে লিখা-লিখিও করছেন। আমি তখন তাকে অনুরোধ করে বললাম যে, আমিও কিছু লেখা-লেখি করতে চাই, যদি আপনারা আমাকে একটু সুযোগ করে দেন, তাহলে আমি লিখতে পারি। তারপর আলীউজ্জামান ভাই আমাকে কুয়েতের বাংলা সাহিত্যাংগনের অনেকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। তখন থেকে অনেকের সহযোগীতায় আমি কুয়েত থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন বাংলা পত্র-পত্রিকাতেও ইসলামীক বিষয়ে লেখা-লেখি শুরু করলাম। যখন থেকে কুয়েতের পত্র-পত্রিকায় লিখা শুরু করেছি ঠিক তখন থেকেই কুয়েতে একটি ইসলামী পত্রিকার অভাব সর্বদাই অনুভব করেছি। কারণ তখন কুয়েতে প্রায় তিন লক্ষের উপরে বাংলাদেশী প্রবাসী বসবাস করতো। তারা কুয়েতে বিভিন্ন সময়ে অপরাধী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় কুয়েতীদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রায় শূণ্যের কোটায় নেমে আসে। মনে করেছিলাম যে, এখানে যদি একটি ইসলামী বাংলা পত্রিকা থাকে তাহলে তার মাধ্যমে মানুষের নীতি নৈতিকার জ্ঞান সম্পর্কে জানতে পেরে বাংলাদেশীরা অপরাধমূলক কাজ থেকে কিছুটা হলেও দূরে থাকতো। আর তখন কুয়েতীদের কাছে আমাদের দেশ ও জাতির হাড়ানো সম্মান ও গৌরব কিছুটা হলেও ফিরিয়ে আনা সম্ভব হতো। সাধারণ পত্রিকাগুলিতে ইসলামের বিষয়গুলো তেমন একটা বেশী থাকে না। যদি পুরোপুরী একটি ইসলামী পত্রিকা থাকে তাহলে তার মাধ্যমে ইসলামী অনেক বিষয় জানা সম্ভব। আমার অন্তঃকরণের এই ইচ্ছাটার কথা কুয়েতের বাংলা সাহিত্যাঙ্গনের ক’একজন ভাইকে জানিয়ে একটি ইসলামী পত্রিকা প্রকাশের জন্যে অনুরোধ জানালাম। কিন্তু বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কেউ রাজী হলেন না। তারপর তৎকালীন সময়ে গ্লোবাল বিজনেস ও ট্র্যান্সলেশন সেন্টারে অনুবাদক হিসেবে কর্মরত মাওলানা মুহাঃ রুহুল আমিন ভাই (যিনি বর্তমানে ক্যামব্রিয়ান কলেজ বারিধারা, গুলশান-ঢাকা’র ইসলামী স্ট্যাডিজ বিভাগের প্রভাষক ও বিশিষ্ট ইসলামী ফিন্যান্স গবেষক)-কে বললাম যে, আপনি একটু চেষ্টা করে দেখুন ছোট্ট করে অল্প ক’এক পাতার একটি ইসলামী পত্রিকা বের করা যায় কী না? যা খরচ হবে আমরা সবাই মিলে তা সাদকা জারিয়া হিসেবে বহন করবো। তারপর মাওলানা মুহাঃ রুহুল আমিন ভাই এক পাতার দুই পৃষ্ঠায় লিখা “মাস্তুল” নামের একটি ভাঁজ পত্রিকা বের করার ব্যবস্থা করলেন। যার সম্পাদক ছিলেন রুহুল আমিন ভাই, আর প্রকাশনার দায়িত্বে ছিলেন গ্লোবাল বিজনেস সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষ এবং লেখা-লেখিতে সহযোগীতায় ছিলাম কবি ওমর ফারুক জীবন ভাই, মাওলানা খান আলম, আমার সহকর্মী সার্জেন্ট কবি আলীউজ্জামান ভাই, ফ্লাইট সার্জেন্ট কবি শহিদুল ইসলাম বাদল ভাই, এবং আমিসহ কুয়েতের আরো অনেক কবি সাহিত্যিক। এ ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে অনেক লেখক লেখিকা। তাদের মধ্যে কবি ও সুসাহিত্যিক বোন মাসুদা সুলতানা রুমী অন্যতম।
কুয়েতের মাটিতে বাংলাভাষায় একটি ইসলামী পত্রিকার পদযাত্রা:
“মাস্তুল” নামক এক পাতার দুই পৃষ্ঠার সেই ভাঁজ পত্রিকাটি অল্প কিছুদিনের মধ্যে আল্লাহর অশেষ রহমতে কুয়েতে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এরকম পরিস্থিতিতে আমি রুহুল আমিন ভাইকে পুনরায় অনুরোধ জানাই একটা ইসলামী ম্যাগাজিন প্রকাশ করার জন্যে। কিন্তু অর্থের অভাবের কথা ভেবে তিনি সামনে অগ্রসর হতে রাজী হলেন না। এভাবে কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর একদিন গ্লোবাল ট্র্যান্সলেশন সেন্টারের একটা টেবিলে দেখলাম মালায়লাম (ক্যারালা) ও উর্দু ভাষায় প্রকাশিত দুইটা পত্রিকা পরে আছে। পত্রিকা দুইটি হাতে নিয়ে রুহুল ভাইকে দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলামঃ এ পত্রিকা দুইটি কোথা থেকে প্রকাশ হয়? রুহল ভাই বললেনঃ আই.পি.সি কুয়েত থেকে। তখন আমি তাকে বললাম তারা যদি তাদের ভাষায় ইসলামী পত্রিকা বের করতে পারে, তাহলে আমরা বাংলা ভাষার এতগুলো লোক কুয়েতে বসবাস করছি ,আমাদের বাংলা ভাষায় কেন ইসলামী পত্রিকা বের হবে না? আপনি একটু চেষ্টা করে দেখুন, কোন কিছু করা যায় কী না? আমার কথাটা সেদিন তিনি তেমন একটা গুরত্ব দিলেন না। তারপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকার ব্যাপারে তাকে বিরক্ত করা শুরু করলাম। এমন সময়ে তিনি কুয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে লিখা-পড়া শুরু করলেন। পরামর্শ দিলাম যে, আপনার অনেক কুয়েতী ক্লাশমেট রয়েছে প্রয়োজন হলে তাদের সাহায্যে কাজটা করার চেষ্টা করুন। পত্রিকা প্রকাশ হলে আমরা অনেকেই ইসলাম বিষয়ে জানতে পারবো এবং লিখা-লিখিও করতে পারবো। আর তাতে আমাদের বাংলা ভাষা-ভাষীরাও ইসলামী নীতি নৈতিকতার জ্ঞান সস্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরে অপরাধী কর্মকান্ড থেকে ফিরে থাকবে। এতে করে কুয়েতীদের কাছে আমাদের দেশ ও জাতির ভাবমূর্তিও উজ্জল হবে ইনশা-আল্লাহ। আমার পরামর্শক্রমে তিনি তার চ্যানেল মোতাবেক ঈসায়ী ২০০৬ সালের মে অথবা জুন মাস থেকে প্রচেষ্টা করতে থাকেন। তারপর রুহুল আমিন ভাই পত্রিকার বিষয়ে বাংলাদেশ কুরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কুয়েত কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে ইসলাম প্রেজেন্টেশন কমিটি (আই.পি.সি) কুয়েত’র কুয়েতী কর্তৃপক্ষের সাথে বেশ ক’একবার পত্রিকা প্রকাশের ব্যাপারে আলোচনা সভার অনুষ্ঠান করেন। সুদীর্ঘ্য প্রায় দুই-আড়াই বছর যাবত অনেক চেষ্টা প্রচেষ্টার পর অবশেষে ঈসায়ী ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস মোতাবেক ১৪২৯ হিজরী’র পবিত্র রমযান মাস থেকে আই.পি.সি বাংলা বিভাগ-এর সম্মানিত দা’ঈ শ্রদ্ধেয় দ্বীনি ভাই মাওলানা মামুনুর রশীদের সম্পাদনায় কুয়েতের বুকে আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাভাষায় ইসলামের পবিত্র বাণী নিয়ে “মাসিক আল-হুদা” প্রথম পদযাত্রা শুরু করে। তখন থেকেই আই.পি.সি নিয়মিতভাবে প্রতিমাসে দশ হাজার কপি আল-হুদা প্রকাশ করে কুয়েত প্রবাসী প্রায় দুই-আড়াই লক্ষাধিক বাংলা ভাষা-ভাষি নর-নারীগণের মধ্যে ইসলামের পবিত্র বাণী প্রচার করে চলছে। “মাস্তুল” নামক যে ভাঁজ পত্রিকাটি কুয়েতের মাটিতে বীজ হিসেবে রোপন করা হয়, তারই পরিপূর্ণ ফসল হচ্ছে আজকের “মাসিক আল-হুদা”। প্রথম পর্ব দ্বিতীয় পর্ব