Main Menu

তাওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়

তাওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়

তাওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়

তাওবার বিষয়টি আলোচনা করার আগে গুনাহ ও শিরক সর্ম্পকে আলোচনা করা দরকার। গুনাহ ও শিরকের বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর তাওবার বিষয়টি আলোচনা করা হলে তাওবা করতে সহজ হবে। তাই প্রথমে গুনাহ, দ্বিতীয়ত শিরক ও তৃতীয়ত তাওবার বিষয়টি আলোচনা করা হলো।
গুনাহ
আল্লাহর ও আল্লাহর রাসূল যেসব কাজ করতে বলেছেন তা না করা এবং যেসব কাজ করতে নিষেধ করেছেন তা করা হলো গুনাহ। খারাপ কথা, খারাপ কাজ ও খরাপ আচরণও গুনাহ। কারো হক নষ্ট করা, কাউকে গালি দেয়া, কাউকেও কষ্ট দেয়া, কারো অধিকারে হস্তক্ষেপ করা, আল্লাহর দেয়া সিমা লংঘন করাও গুনাহের কাজ। গুনাহ আল্লাহর সাথে ও বান্দার সাথে জড়িত। আল্লাহর সাথে জড়িত গুনাহ আল্লাহ ইচ্ছা করলে মাপ করে দিতে পারেন কিন্তুু বান্দার সাথে গুনাহ বান্দা যতক্ষন পর্যন্ত মাপ না করে দিবেন ততক্ষন পর্যন্ত আল্লাহও মাপ করতে পারবেন না।
গুনাহের প্রকার
গুনাহ সাধারণত তিন প্রকারের হয়ে থাকে।
১. ফরয ইবাদত ছেড়ে দেড়া : আল্লাহতায়ালা বান্দার উপর যে সকল ইবাদত ফরয করেছেন সে গুলোকে ছেড়ে দেয়া। যেমন নামায, রোজা, যাকাত ইত্যাদি। সালাত আদায় না করা কবীরা গুনাহ অনুরূপভাবে সওম এবং যাকাত আদায় না করাও কবীরা গুনাহ। এ ধরনের গুনাহ হতে মাপ পাওয়ার জন্য করণীয় হল, যে সকল ইবাদত ছুটে গিয়াছে তা যথা সম্ভব ক্বাযা আদায় করা। আর যদি ক্বাযা আদায় করা সম্ভব না হয় তার বিকল্প যেমন রোজার ক্ষেত্রে ফিদয়া আদায় করা। আর যদি তাও সম্ভব না হয় তবে তার জন্য আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করতে হবে এবং আল্লাহর নিকট হতে মাপ করিয়ে নিতে হবে।
২. নিষিদ্ধ কাজ করা : আল্লাহ এবং বান্দার মাঝে সংঘটিত গুনাহসমুহ। যেমন : মদ পান করা, গান বাজনা করা, সুদ খাওয়া ইত্যাদি। এ ধরনের গুনাহের কারণে অবশ্যই লজ্জিত হতে হবে এবং মনে মনে প্রত্যয়ী হতে হবে যে এ ধরনের গুনাহ ও অপরাধ আর কখনো করবে না।
৩. গুনাহ বান্দার সাথে সর্ম্পকিত : গুনাহের সর্ম্পক বান্দার সাথে। এ ধরনের গুনাহ সবচেয়ে কঠিন ও মারাত্মক। এ ধরনের গুনাহ আবার কয়েক ধরনের হতে পারে-
(ক) মালের সাথে সর্ম্পকিত : ধন সম্পদের সাথে সম্পর্কিত, এ বিষয়ে করণীয় হল যে লোকের কাছ থেকে কর্জ নিয়েছেন অথবা যার হক্ব নষ্ট করেছেন কিংবা যার ক্ষতি করেছেন, আপনাকে অবশ্যই তার পাওনা পরিশোধ করতে হবে এবং তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যদি পরিশোধ বা ফেরত দেয়া সম্ভব না হয়, হয়ত যে সম্পদটি আপনি নষ্ট করেছিলেন তা এখন আর আপনার নিকট অবশিষ্ট নাই, কিংবা আপনি নি:স্ব হয়ে গিয়েছেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে ক্ষতিগ্রস্ত লোকটি হতে ক্ষমা চাইতে হবে এবং তার থেকে অনুমতি নিয়ে তা হালাল করে নিতে হবে। আর যদি এ রকম হয় যে লোকটি মারা গিয়েছে অথবা অনুপুস্থিত। যার কারণে ক্ষতিপূরণ দেয়া কিংবা মাফ নেওয়া এর কোনটিই সম্ভব নয় তাহলে তার পক্ষ হতে তা দান করে দিতে হবে। আর যদি তাও সম্ভব না হয়, তবে তাকে অবশ্যই বেশি বেশি নেক আমল করতে হবে, আল্লাহর দরবারে বেশী বেশী তাওবা ও কান্নাকাটি করতে হবে যাতে আল্লাহ ক্বিয়ামত দিবসে লোকটিকে আপনার উপর রাজি করিয়ে দেয়।
(খ) মানুষের সাথে সর্ম্পকিত : মানুষের জীবনের সাথে সম্পর্কিত, যেমনÑহত্যা করা বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নষ্ট করা, তাহলে আপনাকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি অথবা তার অবিভাবককে ক্বিসাস বা প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ দিতে হবে অথবা তারা আপনাকে ক্ষমা করে দিবে এবং কোনো বদলা নেবে না মর্মে একটি সমঝতায় পৌঁছতে হবে। আর যদি তাও সম্ভব না হয়, তবে অবশ্যই আল্লাহর দরবারে বেশী বেশী তাওবা ও কান্নাকাটি করতে হবে, যাতে আল্লাহ ক্বিয়ামত দিবসে লোকটিকে আপনার উপর রাজি করিয়ে দেন।
(গ) মানুষের সমভ্রম হরণ করা : গীবত করা, কারো বিরুদ্ধে অপবাদ দেয়া অথবা গালি দেয়া ইত্যাদি। তখন আপনার করণীয় হল, যার বিপক্ষে এ সকল কথা বলেছিলেন, তার নিকট গিয়ে নিজেকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করা এবং বলা যে ভাই আমি মিথ্যুক, আমি আপনার বিরুদ্ধে যে সব অপবাদ বা বদনাম করেছি তা ঠিক নয় আমি মিথ্যা বলেছি। আর যদি ঝগড়া বিবাদ বা নতুন কোন ফাসাদ কিংবা লোকটির ক্রোধ আরো প্রকট আকার ধারণ করার সম্ভাবনা না থাকে তবে তার নিকট সব কিছু প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। অন্যথায় আল্লাহর নিকট অধিক হারে তাওবা করতে হবে। যাতে আল্লাহ তাকে আপনার উপর রাজি করিয়ে দেন। আল্লাহর নিকট প্রার্থনা আল্লাহ যেন লোকটির জন্য এর বিপরীতে তার জন্য অশেষ কল্যাণ নিহিত রাখে এবং তার জন্য বেশী বেশী প্রার্থনা করবেন।
(ঘ) ইজ্জত হরণ করা : যেমন কারো অনুপস্থিতিতে তার পরিবারের ইজ্জত হরণ অথবা সন্তান-সন্তুতির অধিকার নষ্ট বা খিয়ানত করা।
গুনাহের খারাপ পরিণতি ও ক্ষতিকর দিকসমূহ
গুনাহ মানুষের দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতের জন্যই ক্ষতিকর। গুনাহের কারণে মানুষ দুনিয়াতে লাঞ্ছনা-বঞ্চনা, অপমান-অপদস্থের শিকার হয়। দুনিয়ার জীবনে তার অশান্তির অন্ত থাকে না। অনেক সময় দুনিয়ার জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। ফলে দুনিয়াতেও গুনাহের কারণে তাকে নানাবিধ শাস্তি ও আজাব-গজবের মুখোমুখি হতে হয় এবং আখেরাতে তো তার জন্য রয়েছে অবর্ণনীয়-সীমাহীন দুর্ভোগ। এ ছাড়া গুনাহ কেবল মানুষের আত্মার জন্যই ক্ষতিকর নয় বরং আত্মা ও দেহ দুটির জন্যই ক্ষতিকর। গুনাহ মানুষের জন্য কঠিন এক ভয়ানক পরিণতি ডেকে আনে। গুনাহ মানুষের আত্মার জন্য এমন ক্ষতিকর যেমনিভাবে বিষ দেহের জন্য ক্ষতিকর।
১. ইলম তথা দ্বীনি জ্ঞান লাভ থেকে বঞ্চিত হওয়া : ইলম হল নূর যা আল্লাহ মানুষের অন্তরে স্থাপন করেন কিন্তু গুনাহ-পাপাচার এ নূরকে নিভিয়ে দেয়। সুতরাং গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তি কখনো ইলম তথা শরিয়তের জ্ঞান লাভে ধন্য হতে পারে না। ইলম হল, আল্লাহর নূর আর গুনাহ হলো অন্ধকার। আর এ কথা স্পষ্ট যে, আলো ও অন্ধাকার কখনো এক হতে পারে না।
২. রিযিক থেকে বঞ্চিত হওয়া : বান্দা গুনাহে লিপ্ত হওয়ার কারণে রিযিক হতে বঞ্চিত হয়। মানুষের রিযিকে সংকীর্ণতা দেখা দেয়। সুতরাং, রিযিকের স্বচ্ছলতা কামনাকারীদের জন্য গুনাহের কাজ ছেড়ে দিতে হবে।
৩. গুনাহ দেহ ও আত্মাকে দুর্বল করে দেয় : নেক আমলের কারণে মানুষের চেহারা উজ্জ্বল হয়, অন্তর আলোকিত হয়, রিযিক বৃদ্ধি পায়, দেহের শক্তি ও মনোবল চাঙ্গা হয়, মানুষের অন্তরে মহব্বত বৃদ্ধি পায়। পক্ষান্তরে খারাপ কাজে মানুষের চেহারা কুৎসিত হয়, অন্তর অন্ধকার হয়, দেহ দুর্বল হয়, রিযিক সংকীর্ণ হয় এবং মানুষের অন্তরে তার প্রতি ঘৃণা জন্মায়।
৪. গুনাহ আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য হতে বঞ্চিত করে : গুনাহ আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য হতে বঞ্চিত করে। যদি গুনাহের কারণে তাকে কোন শাস্তি নাও দেয়া হয়, কিন্তু সে আল্লাহর বিশেষ ইবাদত বন্দেগী হতে বঞ্চিত হবে।
৫. গুনাহকে ঘৃণা বা খারাপ জানার অনুভূতি হারিয়ে ফেলে : ফলে গুনাহের কাজে সে অভ্যস্ত হয়ে যায় এবং সমস্ত মানুষও যদি তাকে দেখে ফেলে বা তার সামলোচনা করে এতে সে লজ্জাবোধ বা গুনাহ করাকে খারাব ও অন্যায় মনে করে না। এ ধরনের মানুষকে আল্লাহ ক্ষমা করেন না এবং তাদের তাওবার দরজাও বন্ধ হয়ে যায়।
৬. গুনাহর গোষণা না দেয়া : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন ‘‘আমার সকল উম্মতকে ক্ষমা করা হবে একমাত্র ঘোষণা দানাকারী ছাড়া। আর ঘোষণা হল, কোন ব্যক্তি রাতে কোন পাপ করল আর আল্লাহ তার অপকর্মকে গোপন রাখলেন কিন্তু লোকটি সকালে লোকদের ডেকে ঘোষণা করতে লাগল, হে অমুক আমি রাতে এই এই কাজ করেছি। রাতে তার রব তাকে গোপন করল আর সকালে সে আল্লাহর গোপন করা বিষয় প্রকাশ করে দিল। (সহীহ মুসলিম)
৭. গুনাহকে কিছু মনে না করা : বান্দা গুনাহ করতে করতে গুনাহ তার জন্য সহজ হয়ে যায়, অন্তরে সে গুনাহকে ছোট মনে করতে থাকে। তার মধ্যে অপরাধ বোধ অবশিষ্ট থাকে না। ফলে সে কোন অপরাধকে অপরাধ মনে করে না। আর এটাই হল একজন মানুষের জন্য ধ্বংসের নিদর্শন। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-“মু’মিন নিজ গুনাহগুলোকে এমনভাবে দেখে যে, যেন একটি পাহাড়ের পাদদেশে বসে আছে আশঙ্কা করছে যে সেটি তার উপর পতিত হবে আর পাপী নিজ গুনাহসমূহকে মাছির মত মনে করে যা তার নাকের উপর পড়েছে একটু পর উড়ে গিয়েছে। (সহীহ মুসলিম)
৮. গুনাহ লাঞ্ছনা ও অপমানের কারণ হয়ে থাকে : সকল প্রকার ইজ্জত একমাত্র আল্লাহর আনুগত্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আল্লাহর আনুগত্যের বাহিরে কোথাও ইজ্জত সম্মান পাওয়া যাবে না। তিনি যাকে ইচ্ছা ইজ্জত দান করেন আর যাকে ইচ্ছা বেÑইজ্জত করেন। আল্লাহ বলেন-‘‘কেউ ইজ্জতের আশা করলে মনে রাখতে হবে যে, সমস্ত ইজ্জত আল্লাহরই।’’ (ফাতের : ১০) অর্থাৎ ইজ্জত আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমেই তালাশ করা উচিত, কারণ, আল্লাহর আনুগত্য ছাড়া কোথাও ইজ্জত খুঁজে পাওয়া যাবে না। আল্লাহর আনুগত্যের বাহিরে যে ইজ্জত তালাশ করবে তাকে অবশ্যই বে ইজ্জত হতে হবে। তাকে ভোগ করতে হবে লাঞ্ছনা, বঞ্চনা আর হতাশার গানী। তাই আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমেই ইজ্জত তালাশ করতে হবে।
৯. গুনাহ মানুষের জ্ঞান বুদ্ধিকে ধ্বংস করে দেয় : কারণ মানুষের জ্ঞান বুদ্ধির জন্য একটি আলো বা নূর থাকে আর গুনাহ ঐ নূর বা আলোকে নিভিয়ে দেয়, ফলে জ্ঞান বুদ্ধি ধ্বংস হয়ে যায়।
১০. গুনাহ অন্তরকে কাবু করে ফেলে : গুনাহ গুনাহকারীর অন্তরকে কাবু করে ফেলে এবং সে ধীরে ধীরে অলসদের অর্ন্তভুক্ত হয়। যেমন আল্লাহ বলেন-অর্থাৎ ‘‘কখনো না, বরং তারা যা করে তাই তাদের হৃদয়ে মরিচা ধরিয়ে দিয়েছে।’’ (মুতাফফিফীন : ১৪)
এ আয়াত সম্পর্কে ওলামায়ে কেরাম বলেন, বার বার গুনাহ করার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে। তখন তার অন্তর আর ভাল কিছু গ্রহণ করে না। ভাল কাজ, ভাল কোন উপদেশ এবং মনীষীদের বাণী সবই তার কাছে অসহনীয় ও বিরক্তিকর মনে হয়। ফলে সে তার মনের ইচ্ছা ও খেয়াল খুশি মত যা ইচ্ছা তাই করতে থাকে। কোন অন্যায় অপরাধ তার নিকট অন্যায় মনে হয় না। গুনাহ তার নিকট আর গুনাহ বলে বিবেচিত হয় না। এ ধরনের লোকের সংখ্যা বর্তমান সমাজে অসংখ্য রয়েছে। তারা সালাত আদায় করে না, সওম পালন করে না, যাকাত প্রদান করে না। কিন্তু এ সব যে প্রতিটিই মারাত্মক অপরাধ তা তাদের মনে একটুও রেখাপাত করে না। তারা যে অপরাধী, গুনাহগার ও পাপী এ ধরনের কোন অনুভূতি তাদের মনষ্পটে জাগ্রত হয় না এবং তাদের বিবেক বিন্দু পরিমাণও নাড়া দেয় না। ফলে তাদের অন্তর পাথরের চেয়ে বেশি কঠিন হয়ে যায়। তাদের অন্তরসমূহ হককে গ্রহণ করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে। ফলে এক পর্যায়ে ঈমান হারা হয়ে মারা যায়। আল্লাহ আমাদেরকে এ ধরনের পরিণতি হতে হেফাজত করুন।
১১. গুনাহ বান্দাকে অভিশাপের অর্ন্তভুক্ত করে : গুনাহ বান্দাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অভিশাপের অর্ন্তভুক্ত করে। কারণ, তিনি গুনাহগারদের ওপর অভিশাপ দিয়েছেন। যেমন সুদ গ্রহীতা, দাতা, লেখক ও সাক্ষী-সকলের উপর অভিশাপ করেছেন। এমনিভাবে অভিশাপ করেছেন চোরের উপর। গাইরুল্লাহর নামে জবেহকারী, জীবের ছবি অংকনকারী, মদ্যপানকারীসহ বিভিন্ন গুনাহের উপর তিনি অভিশাপ করেছেন। সুতরাং, মনে রাখতে হবে, যে গুনাহের কারণে আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অভিশাপ করেছেন সে সব গুনাহে লিপ্ত হলে তাকে অবশ্যই আল্লাহ ও তার রাসূলের অভিশাপের ভাগীদার হতে হবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের অভিশাপের ভাগীদার হয় তার পরিণতি যে কী হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
১২. গুনাহ দু’আ হতে বঞ্চিত করে : গুনাহ আল্লাহর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার ফেরেশতাদের দু’আ হতে বঞ্চিত হওয়ার কারণ হয়। কেননা, আল্লাহ তার নবীকে বান্দা বান্দীদের জন্য দু’আ করার আদেশ দিয়েছেন।
ইবাদত, আনুগত্য ও খেলাফতের দায়িত্ব পালনের জন্য মহান আল্লাহ আমাদের পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। বাঁচিয়ে রেখেছেন নানা নেয়ামতরাজী দ্বারা। সুতরাং আনুগত্য করাই আমাদের কাজ। কল্যাণ ও কামিয়াবির পথ এটিই। তার পরও নফস-শয়তানের প্রবঞ্চনায় অন্যায়-অপরাধ হতে পারে, হয়ে যায়। কিন্তু রহমানুর রাহীম মহান আল্লাহর করুণা সীমাহীন। তিনি বান্দাকে অপরাধ মুক্ত হিসাবে হাশরে উপস্থিত দেখতে চান। তাই অন্যায় হয়ে গেলেও তার প্রতিকারের সুন্দর ব্যবস্থা রেখেছেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, পাপ থেকে তাওবাকারী এমন হয়ে যায় যেন সে পাপই করেনি। তিনি আরো বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ মৃত্যুর লক্ষণ শুরু হওয়া অবধি বান্দার তাওবা কবুল করেন। তাই সুবিবেচনা ও নিজের প্রতি ইনসাফের পরিচয় হবে, সর্বদা পাপমুক্ত থাকার সর্বাত্মক চেষ্টা করা। যদি পাপ হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই তাওবা সুযোগ গ্রহণ করা। তাওবাতে আল্লাহ অনেক খুশি হন।

Related Post