যাকাতুল ফিতর ফরয। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান শেষে ঈদুল ফিতরের সময় তা ফরয করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন:“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোলাম, স্বাধীন, পুরুষ, নারী, ছোট-বড় সকল মুসলিমের উপর সদকাতুল ফিতর ফরয করেছেন”। বুখারি: (১৫১১), মুসলিম: (৯৮৪)
সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ এক ‘সা’, দেশের প্রচলিত খাদ্য থেকে তা পরিশোধ করতে হবে। আবু সায়িদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন:“আমরা ঈদুল ফিতরের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে এক ‘সা’ খাদ্য প্রদান করতাম, তখন আমাদের খাদ্য ছিল গম, কিশমিশ, পনির ও খেজুর”। বুখারি: (১৫১০)
অতএব টাকা, বিছানা, পোশাক ও জীব জন্তুর খাদ্য দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় হবে না, কারণ এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশের বিপরীত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:“যে এমন আমল করল, যার উপর আমাদের আদর্শ নেই তা পরিত্যক্ত”। বুখারি: (২০), (২৬৯৭), মুসলিম: (১৭১৮), আবু দাউদ: (৪৬০৬), ইবন মাজাহ: (১৪), আহমদ: (২/১৪৬)
এক ‘সা’ এর পরিমাণ হচ্ছে, দুই কেজি চল্লিশ গ্রাম ভালো গম। এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ‘সা’, যার দ্বারা তিনি সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ করেছেন।
ঈদের সালাতের আগে সদকাতুল ফিতর বের করা ওয়াজিব, তবে উত্তম হচ্ছে ঈদের দিন সালাতের পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করা। ঈদের একদিন বা দু’দিন পূর্বেও দেয়া আদায় করা বৈধ। সালাতের পরে দিলে আদায় হবে না। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম “বেহুদা ও অশ্লীলতা থেকে সওমকে পবিত্র করা ও মিসকিনদের খাদ্য স্বরূপ সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব করেছেন। যে তা সালাতের পূর্বে আদায় করল, সেটাই গ্রহণযোগ্য সদকা, আর যে তা সালাতের পরে আদায় করল, সেটা অন্যান্য সদকার ন্যায় সাধারণ সদকা”। আবু দাউদ: (১৬০৯), ইবন মাজাহ: (১৮২৭), হাকেম: (১/৪০৯), হাকিম হাদিসটি সহিহ বলেছেন এবং ইমাম যাহাবি তার সমর্থন করেছেন।
আর যদি কেউ ঈদের সালাত শেষ হয়ে যাওয়ার পর ঈদ সম্পর্কে জানতে পারে, অথবা সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়ার সময় মরুভূমিতে থাকে, অথবা এমন জায়গায় থাকে যেখানে সদকা গ্রহণ করার কেউ নেই, তাহলে সুযোগ মত আদায় করলেই হবে। আল্লাহ ভাল জানেন।
আর আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মাদ ও তার পরিবার ও সাহাবীদের উপর দুরুদ ও সালাম পাঠান।
সমাপ্ত