ফরজ নামাজ মসজিদে পড়ার সওয়াব

ছালাতে মনোযোগ অর্জনের গুরুত্ব ও উপায়

ছালাতে মনোযোগ অর্জনের গুরুত্ব ও উপায়

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, একজন লোক ঘরে নামাজ পড়লে একটি নেকী পায়, সে অক্তিয়া মসজিদে পড়লে ২৭ গুণ, জুমা মসজিদে পড়লে পাঁচশগুণ, মসজিদে আকসায় পড়লে পঞ্চাশ হাজার গুণ, আমার মসজিদে অর্থাৎ মসজিদে নববীতে পড়লে পঞ্চাশ হাজার গুণ এবং মসজিদুল হারাম বা কাবাঘরে পড়লে এক লাখ গুণ সওয়াব পাবে। (ইবনে মাজাহ, মেশকাত)
নবী করীম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আযান শোনে অতঃপর সে (অসুখ বা ভয় প্রভৃতি) কোনো ওজর ছাড়া নামাজে হাজির হয় না, (ঘরে পড়ে) তার নামাজও হয় না। এই হাদিস দ্বারা মসজিদের গুরুত্ব প্রমাণিত হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সেরা জায়গা মসজিদ এবং সবচেয়ে নি¤œমানের জায়গা হাটবাজার। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর ওয়াস্তে মসজিদ বানায় তার জন্য আল্লাহ জান্নাতে ঘর বানান। (মুসলিম, মেশকাত, ৬৮ পৃ.)
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ বানানোর এবং সেগুলোকে পাকসাফ রাখবার ও খোশবু দিয়ে সুবাসিত করার হুকুম দিয়েছেন। (আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মেশকাত)
মসজিদে কি কি করা নিষেধ : রাসূল (সা.) মসজিদে কবিতা আবৃত্তি করতে, বেচাকেনা করতে ও জুমার দিনে নামাজের আগে গোল হয়ে বসে চক্র বানাতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, এমন একটা যুগ আসবে যখন মানুষ মসজিদে বসে দুনিয়ার কথা বলবে, তখন তুমি তাদের সাথে বসবে না। তিনি মসজিদে কেসাস (খুনের প্রতিশোধ) নিতে এবং হদ (শরিয়াতি শাস্তি) দিতে নিষেধ করেছেন। রাসূল (সা.) সাত জায়গায় নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন। ১. জঞ্জাল ফেলার জায়গায়, ২. জবেহ করার জায়গায়, ৩. কবরখানায়, ৪. রাস্তায়, ৫. গোসলখানায়, ৬. উট বাঁধার জায়গায়, ৭. কাবার ছাদের ওপর। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, গোরস্থান, গোসলখানা ও অপবিত্র জায়গা ছাড়া সমস্ত জমিনটাই মসজিদ। ঘরেও মসজিদ বানাও। রাসূল (সা.) বলেন, তোমাদের কিছু নামাজ (অর্থাৎ সুন্নত ও নফল নামাজগুলো) নিজেদের ঘরে পড় এবং (ঘরে ঐসব নামাজ না পড়ে) সেটাকে কবরে পরিণত করো না। (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত, ৬৯ পৃ.)
যায়দ ইবনে সাবেত (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) তাঁর ঘরে নামাজের জন্য একটি খাস হুজরা করে রেখেছিলেন। অনেক লোক তাঁর কাছে আসত এবং তাতে নামাজ পড়ত। তিনি বলেন, ফরজ ছাড়া পুরুষের অন্যান্য সুন্নত ও নফল নামাজ ঘরে পড়া উত্তম। (বুখারী, মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন তোমাদের কেউ মসজিদে ঢুকবে তখন এই দোয়া পড়বে, আল্লাহুম্মাফ তাহলী আব-ওয়া-বা রহমাতিকা। অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি আমার জন্য তোমার রহমতের দরজাগুলো খুলে দাও। যখন বের হবে তখন এই দোয়া পড়বে, আল্লাহুম্মা ইন্নী আস আলুকা মিন ফাদলিকা। অর্থাৎ হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে তোমার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। মসজিদে ঢোকার সময় রাসূল (সা.) প্রথমে ডান পা রাখতেন। বের হওয়ার সময় প্রথমে বাম পা বের করতেন। রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি নিজের ঘর থেকে অজু করে ফরজ নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে যায় সে ব্যক্তি একজন এহরামওয়ালা হজ সমাধাকারীর নেকি পায়। রাসূল (সা.) বলেন, যখন তোমরা কেউ মসজিদে ঢুকবে তখন বসার আগে দুই রাকআত নামাজ পড়ে নেবে। রাসূল (সা.) বলেন, যখন তোমরা জান্নাতের বাগানে ঘোরাফেরা করবে তখন কিছু ফলমূল খেয়ে নিও। সাহাবীরা বললেন, জান্নাতের বাগান কোনটা? তিনি বললেন, মসজিদগুলো। তারা বললেন, তার ফল খাওয়া কেমন? তিনি বললেন, এই তসবিগুলো পড়া, সুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা, ইল্লালাহু আল্লাহু আকবার। (তিরমিযী, মেশকাত)
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ফরজ নামাজ মসজিদে পড়ার তাওফিক দান করুন।

Related Post