ঈমান নষ্ট হওয়া কয়েকটি আমল

imagesCA7M8O2Uএকত্ববাদবিরোধী-আল্লাহ দ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত করে। এ জন্য শিরক-বিদায়াত সম্পর্কে আমাদেমানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমল। আমল ভালো হলে জীবন ধন্য, আর আমল খারাপ হলে জীবন বরবাদ হয়ে যায়। খারাপ আমল করে পৃথিবীতে সাময়িক লাভবান বা আনন্দ পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু ভালো আমলে পৃথিবী ও আখেরাতের মঙ্গল নিহিত। আবার এমন কিছু আমল বা কাজ রয়েছে যা শিরক আর শিরক করলে ঈমান ধ্বংস হয়ে যাবে এবং তার করা সব আমল নষ্ট হয়ে যাবে। তার স্থান হবে চিরস্থায়ী জাহান্নাম। তওবা ব্যতীত যে পাপ মার সুযোগ নেই। বিদায়াত মানুষকে পথভ্রষ্ট করে আর শিরক র সজাগ থাকা উচিত। আল্লাহ নির্দেশিত ও রাসূলুল্লাহ সা: প্রদর্শিত পথেই একনিষ্ঠ থেকে সেভাবে আমল করা উচিত। কোনোক্রমেই অতিরিক্ত বা অন্য কোনো কর্ম করার সুযোগ ইসলামে নেই। নিম্নে এমন কিছু আমল নিয়ে আলোচনা করতে চাই, যা করলে ঈমান ধ্বংস হয়ে যাবে।
১. গায়রুল্লাহর কাছে দোয়া করা : পবিত্র কুরআনে আছে, ‘আর তাঁকে ছেড়ে এমন কাউকে ডেক না, যে না তোমার উপকার করতে পারে, আর না কোনো তি করতে পারে। আর যদি তা করো তবে অবশ্যই তুমি জালেমদের (মুশরিকদের) অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে’। (সূরা ইউনুস-১০৬)

আল্লাহ যদি তোমার কোনো তি বা অকল্যাণ পৌঁছান, তাহলে তিনি ছাড়া তা থেকে পরিত্রাণ দেয়ার কেউ নেই। পান্তরে তিনি যদি তোমার কল্যাণ চান, তবে তাঁর অনুগ্রহ রহিত করার মতো কেউ নেই।’ (সূরা ইউনুস-১০৭)
রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে বাদ দিয়ে তার কোনো সমককে ডাকা অবস্থায় মারা যাবে তাহলে সে (জাহান্নামের) আগুনে প্রবেশ করবে। (বুখারি)

রাসূলুল্লাহ সা: আরো বলেন, ‘জেনে রাখো, গোটা জাতি একসাথে মিলেও যদি তোমার কোনো উপকার করতে চায়, তবে মহান আল্লাহ তোমার ভাগ্যে যা নির্ধারণ করে রেখেছেন, তা ছাড়া কোনো উপকার করতে পারবে না। আর তারা যদি একসাথে মিলে তোমার কোনো তি করতে চায়, তবে আল্লাহ যা তোমার ভাগ্যে নির্ধারণ করে রেখেছেন তা ছাড়া কোনো তি করতে পারবে না’। (তিরমিজি, হা:-৬২)

২. গায়রুল্লাহর নামে জবেহ করা : পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘তুমি তোমার রবের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করো ও জবাই করো। (সূরা কাওছার-২)

রাসূলুল্লাহ (দ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি গায়রুল্লাহর নামে জবাই করে, আল্লাহ তার ওপর লানত করেন’। (মুসলিম)
৩. নজর-নেয়াজ করা : নৈকট্য হাসিল ও ইবাদতের নিয়তে কোনো সৃষ্টিকে নজর-নেয়াজ দেয়ার রেওয়াজ আমাদের সমাজে দেখতে পাওয়া যায়। অনেকে সন্তান কামনায় মাজারে গিয়ে থাকে। মৃত ব্যক্তির কাছে প্রার্থনা করে। এটা তাওহীদের পরিপন্থী এবং স্পষ্ট শিরক।

মহান আল্লাহ বলেন,‘আকাশসমূহ ও পৃথিবীর কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন। যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ মাশীল’। (সূরা শুরা-৪৯ ও ৫০)

 আল্লাহ আরো বলেন, ‘আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, আসমান ও জমিন থেকে কে তোমাদেরকে রুজি দান করেন? কে তোমাদের কর্ণ ও চুসমূহের মালিক? কে জীবিতকে মৃতের মধ্য থেকে এবং মৃতকে জীবিতের মধ্য থেকে বের করে আনেন? কে কর্মসমূহের ব্যবস্থাপনা করে থাকেন? সত্বর তারা বলবে, আল্লাহ! আপনি বলুন, এরপরও কি আল্লাহকে ভয় করবে না’? (সূরা ইউনুস-৩১)

 অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘হে আমার রব আমার গর্ভে যা আছে, নিশ্চয়ই আমি তা খাসভাবে আপনার জন্য মানত করলাম’। (সূরা আল-ইমরান-৩৫)মহান আল্লাহ আরো বলেন, ‘আর যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে, তারা বলে, আমরা তো এদের পূজা এ জন্যই করি যে এরা আমাদেরকে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছে দেবে’। (সূরা জুমার-৩)

৪. কবরের চার পাশে তওয়াফ করা : নৈকট্য হাসিল বা ইবাদতের নিয়তে কবরের চার পাশে তওয়াফ করা যাবে না। কারণ তাওয়াফ কেবল কাবা শরিফের সাথেই নির্দিষ্ট। বান্দার উপাসনা বা দাসত্ব একমাত্র আল্লাহর জন্য। সালাত, সিয়াম, জিকির, সাহায্য কামনা, সন্তান ও রোগমুক্তি কামনা, মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করা, অকল্যাণ দূর করার জন্য দোয়া একমাত্র আল্লাহর কাছে করা যাবে। কবরবাসীর কবর তওয়াফ করে তার মাধ্যমে নিজের বাসনা পূরণের কাকুতি শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘আর তারা যেন তওয়াফ করে প্রাচীন গৃহের। (সূরা হজ-২৯)
আল্লাহ আরো বলেন, ‘হে নবী! তোমার আগে যে রাসূলই আমি পাঠিয়েছি তার প্রতিই ওহি পাঠিয়েছি এই কথার যে, আমি ব্যতিরেকে কোনো ইলাহ নেই। অতএব তোমরা কেবল আমারই ইবাদত করো। (সূরা আম্বিয়া-২৫)
ইবাদতের সংজ্ঞায় ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেন,

সামগ্রিক অর্থে ইবাদত ওসব প্রকাশ্য ও গোপন কথা ও কাজের নাম, যা আল্লাহ ভালোবাসেন ও যাতে তিনি খুশি হন’। (আব্দুর রহমান বিন হাসান, ফাতহুল মাজিদ-পৃঃ ১৭, আত-তাহরিক, ১১ তম বর্ষ ৪র্থ সংখ্যা-১৯ পৃঃ)
৫. গায়রুল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করা : আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ওপর কোনো ব্যাপারে নির্ভরতা ও ভরসা করা যাবে না। সব কাজের সাহায্যদাতা একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা ভরসাকারীদের জিম্মাদার হয়ে যান।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা তাঁর ইবাদত করো এবং তাঁর ওপর ভরসা করো’। (সূরা হূদ-১২৩)
তিনি অন্যত্র বলেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর ওপর ঈমান রাখো, তবে তাঁরই ওপর ভরসা করো, যদি তোমরা মুসলিম হও। (সূরা ইউনুস-৮৪)

আল্লাহ মুমিনদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, তারা যেন প্রতিটি সালাতে কয়েকবার বলে, ‘আমরা আপনারই ইবাদত করি এবং আপনার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি’। (সূরা ফাতেহা)

৬. ইসলাম প্রতিষ্ঠিত কোনো বিষয়কে অপছন্দ করা : পবিত্র ইসলাম ধর্মের কোনো রীতি-নীতি, ইবাদত, সিদ্ধান্ত প্রভৃতিকে অপছন্দ করা যাবে না। পবিত্র কুরআন ও হাদিসের ফয়সালা ও সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা যাবে না। আল্লাহ কর্তৃক পরিপূর্ণ হিসেবে ঘোষিত ইসলামে সব বিষয়ের ফয়সালা রয়েছে। রয়েছে আগের, বর্তমানের ও ভবিষ্যতের সব পরিস্থিতি ও জিজ্ঞাসার সমাধান। তাই ইসলামের কোনো বিষয় নিয়ে বিরোধিতা করা বা আধুনিকতার নামে বা যুগের প্রয়োজনে নিজস্ব মতামত ঢুকিয়ে পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংযোজিত করার কোনো সুযোগ নেই। এমন কিছু করা হলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদের সব আমল বিনষ্ট করে দেবেন।

আল্লাহ বলেন, ‘তা এ জন্য যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তারা তা অপছন্দ করে। সুতরাং আল্লাহ তাদের আমলসমূহ বিনষ্ট করে দেবেন’। (সূরা মুহাম্মাদ-৯)পবিত্র কুরআনে আরো বলা হয়েছে, ‘তোমরা কি পরিবর্তন করতে চাও নিকৃষ্ট বস্তুকে উত্তম বস্তু দ্বারা’। (সূরা বাকারাহ-৬১)

৭. ইসলামের হুকুম-আহকাম নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করা : পবিত্র কুরআন ও সহি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত ইসলামের কোনো হুকুম-আহকাম নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রƒপ করা ঈমানদারের কাজ নয়। অনুরূপভাবে আল্লাহ, তাঁর রাসূল সা: ও পবিত্র কুরআন সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ, বিরোধিতা করা, হাসি-ঠাট্টা করা যাবে না। এসব কিছু কুফরি কালাম। আল্লাহ, আল্লাহর রাসূল সা: ও কুরআন কারিমের সাথে হাসি-তামাশা করার এখতিয়ার কাউকে দেয়া হয়নি।
আল্লাহ বলেন, ‘তুমি বলে দাও, তবে কি তোমরা আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ এবং তাঁর রাসূলের প্রতি হাসি-তামাশা করছিলে? তোমরা এখন (বাজে) ওজর দেখিও না, তোমরা তো তোমাদের ঈমানের পর কুফরি করেছ’। (সূরা তাওবা-৬৫-৬৬)

৮. আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নাম ও সিফাতসমূহ অস্বীকার করা : তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত বা আল্লাহর নাম ও গুণাবলিতে একত্ব, আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব, মহত্ত্ব ও সৌন্দর্য যাবতীয় গুণাবলিতে এক, একক ও নিরঙ্কুশভাবে পূর্ণতার অধিকারী। পবিত্র কুরআন ও সহি হাদিসে আল্লাহর যেসব নাম ও গুণাবলি উল্লিখিত হয়েছে তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। এই নাম ও গুণাবলি যে অর্থ বহন করে সে অর্থেই বিশ্বাস করতে হবে। কোনো রকম ব্যাখ্য-বিশ্লেষণ করে মূল অর্থ বাদ দিয়ে অন্য অর্থ গ্রহণ করা যাবে না। আর ‘আল্লাহ’ শব্দটি আল্লাহর আসল সত্তা (ইসমে জাত)। ‘আল্লাহ নামের কোনো প্রতিশব্দ নেই। মুসলমানদের মধ্যে ‘আল্লাহ’র পরিবর্তে খোদা, বিজাতিরা ঈশ্বর, ভগবান, গড প্রভৃতি শব্দ ব্যবহার করে থাকে। কুরআন ও সহি হাদিসে যেহেতু আল্লাহ শব্দের প্রতিশব্দ পাওয়া যায় না, তাই আল্লাহকে ডাকার েেত্র প্রতিশব্দ ব্যবহার জায়েজ নয়।
পবিত্র কুরআনে আছে, ‘আল্লাহর রয়েছে সুন্দর নামসমূহ। সুতরাং তাঁকে ঐসব নামে ডাকো’। (সূরা আরাফ-১৮০)
হজরত আবু হুরায়রা রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘আল্লাহর নিরানব্বইটি অর্থাৎ একটি কম এক শ’টি নাম রয়েছে। যে এই নামগুলো মুখস্থ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’। (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত- হা: ২২৮৭)
পবিত্র কুরআনে অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘কোনো বস্তুই তাঁর সদৃশ নয়। তিনিই সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা’। (সূরা শুরা-১১)
অন্যত্র আছে, ‘তোমরা কি পরিবর্তন করতে চাও নিকৃষ্ট বস্তুকে উত্তম বস্তু দ্বারা’। (সূরা বাকারাহ-৬১)
৯. বিচারকাজে কুফরি মত অবলম্বন করা : আল্লাহ কেবল স্রষ্টাই নন, তিনি সৃষ্টিরাজি প্রতিপালনও করেন। অর্থাৎ কোনো কিছু সৃষ্টি করার পর আল্লাহ সেই সৃষ্টির ব্যাপারে নির্লিপ্ত থাকেন না, বা সেখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন না। বস্তুত বিশ্বজগতের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য এটা আবশ্যক। আল্লাহর বাণী সর্বকালের সর্বশ্রেণীর মানুষের কল্যাণের জন্য। আল্লাহর বিধানই সব েেত্র অনুসরণযোগ্য। আল্লাহর বিধান অনুযায়ী বিচারকাজ সম্পাদন করা মানুষের জন্য অপরিহার্য। ইসলামী বিধানানুযায়ী বিচার করা হলে মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। মুসলমানের জন্য আল্লাহর বিধান অনুযায়ী বিচার ফায়সালা করা ঈমানি দায়িত্ব। কেউ ঐশী বিধানকে অবমাননা করলে সে কাফের হয়ে যাবে। বর্তমান যুগের সাথে তাল মেলানোর নামে মানব রচিত বিধিবিধান অনুসরণ কিংবা ইসলামের কোনো কোনো নীতি বর্তমান সময়ের জন্য নীতিসঙ্গত বা উপযোগী নয়  এমন মতামত ব্যক্ত করা বা অন্য কোনো (কুফরি) আইন অবলম্বন ও সমর্থন করা আল্লাহ দ্রোহিতার শামিল।
পবিত্র কুরআনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ‘তোমরা মানুষকে ভয় করো না, বরং আমাকে ভয় করো; আর আমার বিধানসমূহের বিনিময়ে (পার্থিব) সামান্য বস্তু গ্রহণ করো না; আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অবতারিত (বিধান) অনুযায়ী হুকুম (বিচার) না করে, তাহলে এমন লোক তো পূর্ণ কাফের’। (সূরা মায়িদাহ- ৪৪)
১০. হারামকৃত বিষয়কে হালাল বা হালালকৃত বিষয়কে হারাম করা : মহান আল্লাহ যেসব বিষয়কে হারাম করেছেন তা চিরদিনই হারাম, আবার যা হালাল করেছেন তা কিয়ামত পর্যন্ত হালাল। কিন্তু তাবিল করে (বিকৃত ব্যাখ্যা) হারামকে হালাল বা হালালকে হারাম করার কোনো অধিকার মানুষকে দেয়া হয়নি। মহাজ্ঞানী আল্লাহ মানুষের জন্য কী প্রয়োজন তা তাঁর চেয়ে বেশি কারো জানা থাকার কথা নয়। তাই তাঁর আদেশ নিষেধ মান্য করা মানুষের অবশ্যই কর্তব্য। কিন্তু কোনো কোনো েেত্র কেউ কেউ বা কোনো কোনো বিশেষ শ্রেণীর ব্যক্তিবর্গের বিচণ (!) মতবাদ ঈমানকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
পবিত্র কুরআনে আছে, ‘আল্লাহ ব্যবসায়কে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম’। (সূরা বাকারা-২৭৫) অথচ সেই সুদকে বেশ সূক্ষ্মভাবে কোনো কোনো েেত্র হালাল করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। আবার পবিত্র কুরআন ও সহি হাদিসে মাদকদ্রব্যকে চিরতরে হারাম করা হয়েছে। ইমাম কুরতুবি (রহ:) বলেন, ‘যা বেশি পরিমাণে গ্রহণ করলে মানুষ মাতাল হয়ে যায় তা সামান্য পরিমাণে গ্রহণ করাও হারাম’। তারপরেও নানাভাবে কোনো কোনো মাদকদ্রব্য (বিড়ি-সিগারেট, তামাক, গুল ইত্যাদি) খাওয়ার রেওয়াজ চালুর েেত্র পরিচ্ছন্ন অনুমতি আমাদের সমাজে দেখতে পাওয়া যায়। আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসকারীদের জন্য শিরক করার কোনো সুযোগ নেই। সারা জীবন ধরে ভালো আমল করলাম এবং মাঝে মধ্যে শিরকের কাজে জড়িয়ে পড়লাম এতে নেক আমল ধ্বংস হয়ে যাবে। শিরক থেকে আমাদেরকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত থাকতে হবে।
আল্লাহ বলেন, ‘যদি তুমি শিরক করো তবে তোমার আমলসমূহ নষ্ট হয়ে যাবে এবং তুমি অবশ্যই তিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’। (সূরা জুমার-৬৫)।
আমরা নিজেদেরকে অনেক েেত্র গুনাহ থেকে বিমুক্ত রাখতে পারি না, কিন্তু যেসব নেক আমল করার জন্য জীবনভর কষ্ট করে গেলাম, অসচেতনতার কারণে বা শয়তানের অসওয়াসায় পড়ে আল্লাহ দ্রোহীমূলক কাজ করে সেই নেক আমলকে বরবাদ করার মতো আহম্মক হওয়া উচিত নয়। এসব অপকর্ম থেকে আত্মরার জন্য আসুন আমরা রাসূলুল্লাহ সা:-এর শিখিয়ে দেয়া দোয়া আমল করি : ‘হে আল্লাহ আমরা আপনার কাছে জেনে বুঝে আপনার সাথে কোনো কিছুকে শরিক করা থেকে পানাহ চাই। আর যা আমাদের জানা নেই তা থেকে মা চাই’। (মুসনাদে আহমাদ)

Related Post