বিজয় কোন পথে

বিজয় কোন পথে

বিজয় কোন পথে

প্রত্যেক জাতিই তার নিজস্ব মতাদর্শ বাস্তবায়নের জন্য প্রাণন্তকর প্রচেষ্টা করে। প্রকৃত মুসলিমগণ চায় ইসলামী বিধি-বিধান মত সবকিছু চলুক। পরিবার হতে রাষ্ট্র পর্যন্ত ইসলামী নিয়ম-নীতি মেনে চলুক। মুসলিম মনে করে এই নিয়মে দেশ চললেই সবাই সুখ-শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। আর একজন সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষ মতাদর্শের লোক চায় কিভাবে সারা দেশের তাদের আদর্শকে গ্রহণ করুক। আর নাস্তিকরা যায় দুনিয়ার সকল আল্লাহ ও রাসূলের আদর্শ ভুলে গিয়ে মনে যা চায় সেভাবে চলুক, এই পৃথিবী পাপাচারের ভারে তলিয়ে যাক, এতে তাদের কিছু যায় আসে না।
তবে এক কথা শতভাগ সত্য যে, সত্যের বিজয় অবশ্যম্ভাবী। সত্য ও বিজ্ঞান সম্মত জীবন বিধানই হলো ইসলাম। কারণ ইসলামেই রয়েছে বহুমুখী বিধানের বিষদ বর্ণনা। এমন কোন দিক নেই, যে বিষয় নিয়ে ইসলামে তার সমাধান নাই। ব্যক্তির প্রবৃত্তি পরিচালনার নিয়ম হতে রাষ্ট্র কিভাবে চলবে তারও নিখুত বর্ণনা রয়েছে ইসলামে। অন্য কোন ধর্মে রাষ্ট্র পরিচালনার বিধান নাই বলেই, তারা বলে রাষ্ট্র আর ধর্ম এক জিনিস না। তাদের ধর্ম রাষ্ট্র পরিচালনার দিকনির্দেশনা দিতে পারে না, একথা স্বীকার না করে, তারা বলে, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। ইসলামী রাষ্ট্রেও সবার অধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে। একথাটিও তারা জানে না।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজ সারা পৃথিবীতে ইসলাম নিভু নিভু করছে, যেই ইসলাম সর্বদা জয়ী, কখনো পরাজিত নয়। কিন্তু মুসলিম সমাজ আজ ইসলামের সুধা হতে বঞ্চিত। যে ইসলাম এক সময় জয়ী ছিলো, তাকে আবার কিভাবে বিজয় করা যায়, সে জন্য সদা প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
বিজয় কোন পথে: পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন: জলে স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে মানুষের কৃত কর্মের কারণে, ফলে তিনি তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করান যেন তারা (সুপথে)ফিরে  আসে।” (সূরা  রুম: ৪১)
কুরআনের উক্ত আয়াতের মাধ্যমে উদ্ভূত উত্কট পরিস্থিতির তথা বিশ্ব মুসলিমের পরাজিত ও নির্যাতিতের কারণ এবং এর প্রতিকার কী তা স্পষ্ট! এ পরিস্থিতি আমাদের কর্মফল মাত্র! আমরাই কুরআন ও হাদীস আল্লাহ ও রাসূলের যথাযথ মূল্যায়ন করিনা। ফলে তারা কটুক্তি করার সাহস পায়। আমাদের উচিৎ সর্ব প্রকার অন্যায় ও পাপ কর্ম পরিত্যাগ করে আল্লাহ মুখী হওয়া। পাপ কর্মই আমাদেরকে এ পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতির কারণ পাপ, স্থায়ীভাবে উত্তরণের পথ পাপ ছেড়ে আল্লাহ মুখী হওয়া। তাকে বেশি করে স্মরণ করা এবং ইবাদতের মাধ্যমে তার প্রতি বিনীত হওয়া। তবেই আল্লাহ আমাদেরকে সাহায্য করবেন। কিন্তু আমরা যারা ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার জন্য রাস্তা ঘাটে এত  দৌড়াদৌড়ি করছি, এসময় ইসলামের মহান বিধান ফরয নামাযেরও আমরা খেয়াল রাখছি না। বিনয়ীর সাথে
ইবাদত ও সাধনায় লিপ্ত হই না। তাকে ডাকার পরিমাণ কি বাড়িয়েছি? তার প্রতি সত্যিকার অর্থে বিনীত হয়েছি? সর্ব প্রকার গোনাহ পরিত্যাগ করতে পেরেছি? কবীরা গোনাহ গুলোই কি আমরা বাদ দিতে পেরেছি? একদিকে ইসলাম বিজয়ের জন্য আন্দোলন করছি অন্যদিকে আল্লাহর নাফরমানি করছি! এভাবে কি আমাদের বিজয় আসবে কখনো? মনে রাখতে হবে আল্লাহর যাবতীয় বিধানাবলী পালনের মাধ্যমে ইসলামের বিজয় এসেছে। উত্তম আদর্শ দিয়েই বিজয় আসবে, এবং হতে হবে সকলের জন্য। আমাদের বিজয় তখনই আসবে যখন আমরা আমাদের আদর্শের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করতে পারবো। মহান আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করতে পারবো।
আসুন, আমরা মাত্র দুটি কাজ করি:
১ নিজেদের অবস্থার উন্নতি করি। প্রত্যেকে প্রত্যেকের শুদ্ধির চিন্তা করি। আল্লার প্রতি মনোনিবেশ করি
২ শরীয়ত সম্মত পন্থায় আন্দোলন করি। আন্দোলনের গর্হিত দিকগুলো সম্পূর্ণ রূপে বর্জন করি।
যদি এই দুটি মাত্র বিষয়কে আমরা ফলো করতে পারি আমাদের বিজয় তবে অত্যাসন্ন। অদূর ভবিষ্যতেই আমাদের দেশে কালিমার পতাকা পতপত করে ওড়বে। ইনশা আল্লাহ
পবিত্র কুরানের একটি বাণী উদ্ধৃতি দিয়ে কথা ওশষ করছিঃ-
“নিশ্চয় আল্লাহ কোন জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাবেন না, যদি তারা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন না করে”। (সূরা রাদ: ১১) আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তাওফীক দান করুন। আমীন

Related Post