মানুষের সম্মান রক্ষায় ইসলামের বিধান

মানুষের সম্মান রক্ষায় ইসলামের বিধান

মানুষের সম্মান রক্ষায় ইসলামের বিধান

আল্লাহর কাছে একমাত্র মনোনীত দ্বীন ও জীবনব্যবস্থার নাম ইসলাম। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নারী-পুরুষ-ধনী-গরিব-শাসক-শাসিত-নির্বিশেষে সব মানুষের সম্মান রক্ষায় ইসলাম দিয়েছে এক অভূতপূর্ব বিধান, সর্বাঙ্গীন নীতিমালা। আল্লাহপাক কারো কুৎসা রটানো, পরনিন্দা ও পরচর্চা করা, কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করা, তিরস্কার-ভর্ৎসনা ও ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করা ইত্যাদির ব্যাপারে কঠিনভাবে নিষেধ করেছেন। গোপন দোষ তালাশ করাকে হারাম করেছেন। পবিত্র কোরানে আল্লাহপাক মুমিনদের উদ্দেশে ইরশাদ করেছেন, হে মুমিনগণ! কোনো পুরুষ যেন অপর পুরুষকে উপহাস না করে। কারণ যাকে উপহাস করা হয়, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তেমনিভাবে কোনো নারীও যেন অপর নারীকে উপহাস না করে। কারণ সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ কোরো না। একে অপরকে মন্দ নামে ডেক না। কারণ ইমানের পর মন্দ নাম অতি মন্দ। যারা তওবা না করে তারাই জালিম।

অহেতুক প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে মানুষকে খাটো করা আদৌ উচিত নয়। ইসলামে এসব কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। একটি হাদিসে এসেছে, হযরত সাফওয়ান ইবনে মুহরিয আল-মাযেনি (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমি ইবনে ওমরের সাথে তার হাত ধরে হাঁটছিলাম, হঠাৎ এক ব্যক্তি সামনে এলো। অতঃপর সে বলল, ‘নাজওয়া’ (গোপন কথা) সম্পর্কে রাসূল (সা.) কে কি বলতে শুনেছেন? তিনি বলেন, আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি, “আল্লাহ তা‘আলা মুমিনের নিকটবর্তী হবেন অতঃপর তার ওপর পর্দা ফেলে তাকে ঢেকে নেবেন এবং বলবেন, মনে পড়ে অমুক পাপ, মনে পড়ে অমুক পাপ? সে বলবে, হ্যাঁ, আমার রব। অবশেষে সে যখন তার সকল পাপ স্বীকার করবে এবং নিজেকে মনে করবে যে, সে ধ্বংস হয়ে গেছে, আল্লাহ বলবেন, তোমার ওপর দুনিয়াতে এসব গোপন রেখেছি আজ আমি তা তোমার জন্য ক্ষমা করে দিচ্ছি। অতঃপর তাকে তার নেক আমলের দফতর দেয়া হবে, পক্ষান্তরে কাফের ও মুনাফিক সম্পর্কে সাক্ষীরা বলবে, এরা তাদের রবের ওপর মিথ্যারোপ করেছিল, জেনে রেখো জালেমদের ওপর আল্লাহর লা‘নত”।-( বুখারি ও মুসলিম)

ব্যক্তি, সামাজিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক জীবনে মানুষের প্রতিপক্ষ থাকতেই পারে। চলতেই পারে পারস্পরিক বিরোধ। তাই বলে একে অন্যকে এমন ভাষায় বা এমন বাক্যবাণে জর্জরিত করা যাবে না, যা দ্বারা তার মানহানি ঘটে। এমন বক্তব্য দেয়া যাবে না, যার কারণে জনসমক্ষে বেইজ্জতি হতে হয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামে দিক-নিদের্শনা মেনে আদর্শ জীবন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মানুষকে সম্মান করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Post